দেশী-বিদেশী অত্যাধুনিক ৩২ আগ্নেয়াস্ত্র এবং ১ হাজার ৫০৭ রাউন্ড গুলিসহ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো. আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন সুন্দরবনের সর্ব বৃহৎ জলদস্যু গ্রুপ ‘জাহাঙ্গীর বাহিনী’ প্রধান জাহাঙ্গীর শিকারীসহ বাহিনীর ২০ জন সদস্য। রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় বরিশাল নগরীর রূপাতলী র্যাব-৮ সদর দফতরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে আত্মসমর্পণ করেন তারা।
আত্মসমর্পনকারী জলদস্যুরা বলেন, পরিবার-পরিজন নিয়ে সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনে থাকার জন্য অন্ধকার জগত ছেড়ে সরকারের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন। স্বাভাবিক জীবনে ফেরার সুযোগ দেয়ায় তারা সরকার প্রধানসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এদিকে গত বছরের ৩১ মে থেকে আজ পর্যন্ত জাহাঙ্গীর বাহিনীসহ মোট ৯টি দস্যু বাহিনীর প্রধানসহ ৯২ জন সদস্য ১৯৬টি অস্ত্র এবং ১০ হাজার ১৪৩ রাউন্ড গুলি র্যাবের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করায় সুন্দরবনে নিরাপদে মাছ শিকার করতে পাড়ার আনন্দে বেজায় খুশী মৎস্যজীবী ও ট্রলারমালিকেরা। তবে এখনও সুন্দরবন দাপিয়ে বেড়ানো কয়েকটি দস্যু বাহিনী নির্মুল করতে পারলে সুন্দরপন পুরোপুরি নিরাপদ হবে বলে মনে করেন তারা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো. আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, যে কোন মূল্যে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সুন্দরবনকে নিরাপদ করা হবে। সরকার কোন ধরনের রক্তপাত চায় না। সরকার চায় এখনও যারা অপরাধে লিপ্ত আছেন, তারা সরকারের আহ্বানে সাড়া দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসুক। সরকার তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করবে।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় র্যাব মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ বলেন, আজসহ ইতিমধ্যে যারা আত্মসমর্পণ করেছেন তাদের সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনে কেউ অন্তরায় হলে, ফের কেউ তাদের কু-পরামর্শ দিয়ে অন্ধকার পথে ঠেলে দিলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। এখনও দস্যুতায় লিপ্ত বাহিনীগুলোকে একই পথে ফিরে আসার আহ্বান জানান তিনি।
র্যাব-৮ কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল মো. আনোয়ার-উজ জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে রেঞ্জ ডিআইজি শেখ মারুফ হাসান, মেট্রো পুলিশ কমিশনার এসএম রুহুল আমীন এবং জেলা প্রশাসক ড. গাজী মো. সাইফুজ্জামন বক্তব্য রাখেন।
বিডি-প্রতিদিন/২৯ জানুয়ারি, ২০১৭/সালাহ উদ্দিন/মাহবুব