বরিশাল-পটুয়াখালী মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি সহ ৫ জনের উপর হামলাকারীদের গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তি প্রদান এবং জেলা সড়ক ও মহাসড়কে সকল প্রকার থ্রি-হুইলার-ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধের দাবীতে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ৭ জেলায় অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘটের প্রথম দিন অতিবাহিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া ধর্মঘটকে কেন্দ্র করে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটলেও সাধারন যাত্রীদের দুর্ভোগ ছিলো চরমে। বরিশাল বিভাগীয় বাস মালিক-শ্রমিক সমন্বয় পরিষদ আহুত ধর্মঘটে সমর্থন দিয়ে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছে বাগেরহাট জেলা বাস মালিক সমিতিও। ধর্মঘটের আওতায় বরিশাল নগরীর দক্ষিণ-পশ্চিমাংশে বিভাগের ৬ জেলা বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী (পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা সহ), বরগুনা, ঝালকাঠী, পিরোজপুর ও পাশ্ববর্তী জেলা বাগেরহাটের অর্ধ শতাধিক রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বিভাগীয় বাস মালিক-শ্রমিক সমন্বয় পরিষদের নেতারা।
দিনভর বর্ষায় নগরীর রূপাতলী বাস টার্মিনালে যাত্রীদের অবর্ননীয় দুর্ভোগ দেখা গেছে। অফিস, স্কুল-কলেজগামী শিক্ষক-শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, সাধারণ যাত্রী এবং রোগী নিয়ে ঘণ্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করে নিরাশ হয়ে ফিরে গেছে অনেকে।
বিভাগীয় বাস মালিক-শ্রমিক সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কাওছার হোসেন শিপন জানান, গত ৮ আগস্ট বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কের কর্নকাঠী এলাকায় বাসে চাঁদাবাজীর খবর পেয়ে মালিক সমিতির সভাপতি সহ ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সেখানে গিয়ে প্রতিবাদ করে। এ সময় পুলিশের উপস্থিতিতে চাঁদাবাজদের হামলায় সমিতির সভাপতি নজরুল ইসলাম খোকন সহ ৫ জন আহত হয়। এ ঘটনায় থানায় মামলা করতে গেলে বন্দন থানা পুলিশ মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরদিন ৯ আগস্ট রূপাতলী টার্মিনালে মালিক সমিতি কার্যালয়ে বিভাগের ৬ জেলা বাস মালিক সমিতি এবং শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দের যৌথ সভায় পুলিশের কাছ থেকে আইনী সহায়তা না পাওয়ায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। একই সাথে ওই ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং সড়ক-মহাসড়কে সকল ধরনের থ্রি-হুইলার সহ ভাড়া মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধের দাবীতে বৃহস্পতিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত হয়।
বরিশালের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মনির হোসেন জানান, যোগাযোগ ব্যবস্থা সবসময় সচল থাকা প্রয়োজন। এটা দীর্ঘ সময় চলতে দেয়া যায় না। সরকারের নির্দেশনা রয়েছে কোথায় নসিমন-করিমন চলবে আর কোথায় বাস চলবে। বাস ধর্মঘট নিরসনে বিভাগীয় কমিশনার সন্ধ্যায় সার্কিট হাাউসে সভা ডেকেছেন। সেখানে বাস মালিক সমিতি, শ্রমিক ইউনিয়ন ও থ্রি-হুইলার যানের নেতা এবং প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন। ওই বৈঠকে ধর্মঘটের সুরহা হবে বলে তারা আশাবাদী।
বিডি প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন