ব্যতিক্রমী একটি দিন কাটালো ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগ। ছিল না কোন সিনিয়র-জুনিয়রের ‘প্রটোকল’। কে বড় নেতা, কে কর্মী সে ভেদাভেদও ছিল না। গল্প, আড্ডা, গান, র্যাফেল ড্র, কুস্তি কি না ছিল ওই আয়োজনে। সবকিছু ছিল সংগঠনের মহানগর, থানা ও ওয়ার্ড নেতাদের উজ্জীবিত করার লক্ষে।
এর আয়োজক ‘যুব আইকন’ খ্যাত ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট। তার উদ্যোগে গতকাল মঙ্গলবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল দশটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত মুক্ত আকাশে স্বস্তির নিশ্বাস নিতে নদীতে কাটালেন দুই সহস্রাধিক নেতাকর্মী।
জানা গেছে, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের মধ্যে এক সুদৃড় নিবিড় সম্পর্ক তৈরি করতে এবং নতুন উদ্যোমে উজ্জীবিত করতে মঙ্গলবার নৌ ভ্রমনের আয়োজন করা হয়। ঢাকার সদরঘাট থেকে চাঁদপুরের একটি চড় পর্যন্ত জায়গা নিধারণ করা হয়। পূর্ব ঘোষিত সময় অনুযায়ী সকাল দশটায় লঞ্চ ছাড়া হয়। সকালে লঞ্চঘাটে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি সম্রাট যখন পৌঁছান তখন শত শত ওয়ার্ড ও থানা নেতারা ফুলের তোরা দিয়ে টাকে বরণ করে নেয়।
এরপর সম্রাট উপস্থিত নেতাদের নিজে ফুল দিয়ে একে একে বরণ করে নেন এবং যুবলীগের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরীর পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানান। তিনি বলেন, আজকে আমরা সবাই এক। কেউ নেতা, কেউ কর্মী নয়। আমরা সবাই ভাই ভাই। দিনটাকে উপভোগ করবো। যে যার মতো আনন্দ করবেন, উল্লাস করবেন। এরপর শুরু হয়, আনন্দ উৎসব। কোন নামী-দামী শিল্পী নয়, যুবলীগের নেতাকর্মীরাই সঙ্গীত পরিবেশ করেন।
উৎসবের ভিন্নমাত্রা যোগ করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের মুখে ‘এই নদীতে সাঁতার কেটে বড় হইছি আমি, এই নদীতে আমার মায়ের’ ‘আজ কেন মন উদাসী হয়ে দুর অজানায় চায় হারাতে, শ্রাবণের মেঘগুলো জড়ে হয়ে আকাশে’সহ চারটি গান। এসময় নেতাকর্মীরা হাততালিসহ উল্লাসে ফেটে পড়েন। পুরো ভ্রমনকালে মহানগর ও থানা-ওয়ার্ড নেতারা সঙ্গীত পরিবেশন করেন।
আনন্দ ভ্রমনে অংশ নেয়া ওয়ার্ড পর্যায়ের একাধিক নেতা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেছেন, আজকের দিনটি সত্যিই আমাদের জন্য ব্যতিক্রমী ও চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে। কারণ ‘যুব আইকন’ খ্যাত মহানগর যুবলীগের সভাপতি ও যুবলীগের শ্রেষ্ঠ সংগঠক ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট ভাই নেতা ও কর্মীর মধ্যে যে দুরুত্ব থাকে তা রাখেননি। অবশ্য তিনি কখনোই তা করেন না। আজকে কে কর্মী, কে নেতা তা বোঝা মুশকিল ছিল। সবাই মিলে অন্যরকম আড্ডা দিলাম।
ভ্রমনে নেতাকর্মীদের ভিন্নস্বাদ দিতে আয়োজন করা হয় কুস্তি খেলা। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সহ-সভাপতি মোরসালিন আহমেদ ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সদস্য জোবায়দুল হক রাসেল কুস্তি খেলায় অংশ নেন। তারা দুজনই দীর্ঘ দেহের অধিকারী। খেলায় মোরসালিন আহমেদ প্রথম হন।
এছাড়াও নৌ-ভ্রমনে অংশ নেওয়া নেতাকর্মীদের ভাগ্য পরীক্ষা করতে আয়োজন করা হয় র্যাফেল ড্র। র্যাফেল ড্রতে প্রথম হন ওয়ার্ড যুবলীগের এককর্মী। প্রথম পুরস্কার হিসেবে ৫২ ইঞ্চি এলইডি টেলিভশন তুলে দেন সংগঠনের আয়োজক সম্রাট। খাবারের মেনুতে ছিল মুরগীর রোস্ট, গরুর রেজেলা, কোরাল মাস, রুই মাস, চিংড়ি, মিস্টিসহ তিন দফায় নাস্তার ব্যবস্থা। এছাড়াও নানা ধরনের ফল।
ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, কর্মীকে দিয়েই নেতার জন্ম। আমি নিজেকে কখনো নেতা ভাবিনা। আমিও যেমন কর্মী, আমার ওয়ার্ডের একজন সদস্যও সমান কর্মী। আমরা সবাই রাষ্ট্র নায়ক শেখ হাসিনার কর্মী। আমাকে একটি সময়ের জন্য গণতন্ত্রের মানসকন্যা রাষ্ট্র নায়ক আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। থানা-ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরা অনেক কষ্ট করে আমাদের সব নিদের্শনা পালন করে। সবাইকে এক সঙ্গে দেখা হয় না। তাই ব্যতিক্রমী এই আনন্দ ভ্রমনের আয়োজন করা হয়। আমি চেষ্টা করছি, নেতাকমীদের প্রাণখুলে আনন্দ করুক। যেখানে কোন ভেদাভেদ থাকবে না। আমার ডাকে যারা সাড়া দিয়ে এসেছেন, তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ তাফসীর