গাজীপুরের কালিয়াকৈরে মামলা তুলে না নেওয়ায় বাদীর বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও মারধর করার অভিযোগ উঠেছে আসামি পক্ষের লোকজনের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার উলুসারা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। হামলায় বাদীর পরিবারের ৩ সদস্য আহত হয়েছে। এ ঘটনায় কালিয়াকৈর থানায় একটি অভিযোগ করা হয়।
থানায় দায়ের করা অভিযোগ ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কালিয়াকৈরের উলুসারা এলাকার ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলামকে গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় দোকানের ভেতর ঢুকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর আহত করে ওই এলাকার বজলুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম, সাগর হোসেন ও আনোয়ারসহ কয়েকজন। এ ঘটনায় আহত ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলামের ভাই সোবহান হোসেন বাদী হয়ে বজলুর রহমানকে প্রধান আসামি করে কালিয়াকৈর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ বজলুর রহমানকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠায়। ওই মামলায় বজলুর রহমান ২০ দিন জেল খাটার পর জামিনে বের হয়। জামিনে বের হওয়ার পর থেকে মামলা তুলে নিতে নানা প্রকার ভয়ভীতি দেখাতে থাকেন। ভয়ভীতি দেখানোর ঘটনায় সোবহান হোসেন বাদী হয়ে কালিয়াকৈর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এরপরও থামেনি বজলুর রহমানসহ তার লোকজনেরা।
বৃহস্পতিবার মামলার হাজিরা দিতে দুই পক্ষই গাজীপুর আদালতে যায়। এসময় বাদী সোবহানকে মামলা তুলে নিতে আবারও চাপ দেয় আসামি বজলুর রহমান। এতে রাজি না হওয়ায় বাদীর উপর ক্ষিপ্ত হয়ে মারতে আসে বজলুর রহমান। পরে আদালত থেকে তারা বাড়িতে চলে আসে। বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে আসামি বজলুর রহমান সাগর, আনোয়ার জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে ৩০ থেকে ৪০ জন লোকজন দা লাঠি, চাইনিজ কুড়াল নিয়ে এসে মামলার বাদী সোবহান হোসেনের বাড়িতে অতর্কিতভাবে হামলা চালায়।
এসময় তারা দা, চাইনিজ কুড়াল ও শাবল দিয়ে কুপিয়ে ঘরের বেড়া এবং জানালাসহ আসবাবপত্র তছনছ করে। এসময় তাদের হামলায় বাদীর মা শরিফা বেগমসহ পরিবারের ৩ সদস্য আহত হন। এসময় বাড়ির লোকজনের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে তারা বিভিন্ন হুমকি দিয়ে চলে যায়। এ ঘটনায় শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে শুক্রবার বিকেলে বজলুর রহমান, জাহাঙ্গীর, সাগর ও আনোয়ারের নাম উল্লেখ করে ৩০/৪০ জনকে আসামি করে কালিয়াকৈর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছে।
এ ব্যাপারে বাদী সোবহান হোসেন বলেন, মামলা তুলে না নেওয়ায় আসামি বজলুর রহমানসহ তার লোকজন প্রতিনিয়তই নানাভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছে। গত বৃহস্পতিবার আদালতে গিয়ে তারা মামলা তুলে নিতে চাপ দেয়। কিন্ত রাজি না হওয়ায় তার লোকজন নিয়ে এসে রাতে আমার বাড়িঘর হামলা চালিয়ে কুপিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত বজলুর রহমান বলেন, আমি সোবহানের বাড়িতে কোনো হামলা-ভাঙচুর করিনি। নিজেরাই নিজেদের বাড়িঘর ভাঙচুর করে আমাদের বিরুদ্ধে দোষ চাপাচ্ছেন। মিথ্যা মামলা দিয়ে তারা আমাকে হয়রানি করছে।
কালিয়াকৈর থানার উপ-পরিদর্শক ইয়াকুব হোসেন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই হামলাকারীরা চলে গেছে। তবে বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই