রংপুর স্টেডিয়াম ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এটি রংপুর ক্রিকেট গার্ডেনের উত্তরে পুলিশ লাইন ও ইসলামপুর জামে মসজিদের পাশে অবস্থিত। এখানে পাকিস্তান আমলে এবং বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে বেশ কয়েকটি বড় বড় টুর্নামেন্ট হয়েছে। গত ২৫/৩০ বছরে রংপুর স্টেডিয়ামে বড় কোনো আয়োজন ছিল না। আয়োজন থাকলেও মাঠে দর্শক আনা যেত না। কয়েক দশক পর এর ব্যতিক্রম হয়েছে। হাজার হাজার ফুটবল প্রেমির উপস্থিতি মনে করিয়ে দিয়েছে আবার ফুটবল ফিরে এসেছে। যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে রংপুর স্টেডিয়াম।
এই স্টেডিয়ামে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে বুধবার শেষ হয়েছে ৩৬ জুলাই গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট। রংপুর স্টেডিয়ামে ফাইনাল খেলায় রংপুর সদর উপজেলা দলের মুখোমুখি হয় গঙ্গাচড়া উপজেলা দল। ফাইনাল খেলা দেখতে গঙ্গাচড়া, সদর উপজেলাসহ রংপুর জেলার ৮ উপজেলা থেকে ট্রাক, বাস, অটোরিকশা, ভ্যান, মোটরসাইকেল, সাইকেলে হাজার হাজার মানুষ রংপুর স্টেডিয়ামে উপস্থিত হন। খেলায় গঙ্গাচড়া উপজেলা দল সদর উপজেলাকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়।
রংপুর স্টেডিয়ামের ইতিহাসে এত পরিমাণ দর্শক গত ২০ বছরেও দেখা যায়নি। দর্শকদের উপস্থিতিতে গ্যালারিতে যেন তিল ধারণের ঠাঁই নেই। মাঠে খেলোয়াড়দের ক্রীড়া নৈপুণ্যের সাথে সাথে দর্শকরা হাততালি, বাঁশি বাজিয়ে উৎসাহ প্রদান করেন। স্টেডয়ামের আশপাশে উঁচু ভবন থেকেও অনেকে খেলা উপভোগ করেছেন। হাজার হাজার ফুটবল প্রেমিদের পদচারণায় মুখর ছিল স্টেডিয়াম। কোথাও তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। হাজার হাজার দর্শকের উপস্থিতি মনে করিয়ে দেয় ফুটবলের হারানো ঐতিহ্য।
একসময় রংপুরের খেলোয়াড় ছাড়া জাতীয় দল গঠনের কথা চিন্তাই করা যেত না। আন্তর্জাতিক গোলরক্ষক সান্টু, কাজী আনোয়ার, কাজী ছাত্তার মোসাদ্দেকসহ কমপক্ষে ২০ জন জাতীয় দলে সুনামের সাথে খেলেছেন। সেসব এখন অতিত। তবে রংপুরের মানুষ এখনো ফুটবল পাগল তার প্রমাণ মিলেছে ৩৬ জুলাই গোল্ডকাপ ফাইনাল খেলায়। খেলা শেষে ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বিজয়ী ও বিজিত দলের খেলোয়াড়দের হাতে ট্রফি তুলে দেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন শহীদ আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন, রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি আমিনুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল প্রমুখ।
বিডি প্রতিদিন/এমআই