দুই বছর ধরে এক তরুণীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল হারুনুর রশিদের (৩০)। সে সময় কৌশলে ধারণ করে রেখেছিলেন প্রেমিকার অশ্লীল ছবি ও ভিডিও। নানা কারণে তাদের প্রেমের সম্পর্ক আর টেকেনি। এখন প্রেমিকার সেই অশ্লীল ভিডিও ও ছবি ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছিলেন হারুন। ওই তরুণী সাবেক প্রেমিক হারুনের সঙ্গে যোগাযোগ করে সেসব ছবি ও ভিডিও মুছে ফেলার অনুরোধ করেন। হারুন দাবি করেন টাকা। এরপর বিভিন্ন সময় ওই তরুণী ৩ লাখ টাকাও দেন। কিন্তু তারপরও ছবি এবং ভিডিও ছড়িয়ে যাচ্ছিলেন হারুন। অবশেষে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে। হারুনের বাড়ি রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার নামকান গ্রামে। তার পিতার নাম শাহজাহান প্রামাণিক। সোমবার সন্ধ্যায় রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) একটি দল তাকে গ্রেফতার করে। গতকাল দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানিয়েছেন আরএমপি কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক।
তিনি জানান, হারুনুর রশিদ আসলে ওই তরুণীর সঙ্গে দুই বছর ধরে প্রেমের অভিনয় করেছেন। মেয়েটির দুর্বলতার সুযোগে হারুন তার অশ্লীল ভিডিও এবং ছবি সংরক্ষণ করে রেখেছিলেন। নানা কারণে মানোমালিন্য হলে এখন তাদের আর কোনো সম্পর্ক নেই। গত ১১ জানুয়ারি মেয়েটি জানতে পারেন, হারুন অন্য একটি নামের ফেসবুক আইডি থেকে তার ভিডিও এবং ছবি পরিচতদের মেসেঞ্জারে পাঠাচ্ছেন।
বিষয়টি জানতে পেরে ওই তরুণী হারুনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এসব মুছে ফেলার জন্য হারুন তখন ৩ লাখ টাকা দাবি করেন। মানসম্মানের ভয়ে ওই তরুণী বিভিন্নভাবে টাকা জোগাড় করে হারুনের হাতে তুলে দেন। কিন্তু তারপরও হারুন থামেননি। আগের মতোই তিনি ভিডিও এবং ছবি ছড়াচ্ছিলেন ইন্টারনেটে। দাবি করছিলেন আরও টাকা। এ নিয়ে ভুক্তভোগী তরুণী নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আরএমপির সাইবার ক্রাইম ইউনিটের সহায়তায় হারুনকে তার নিজ গ্রাম থেকে গ্রেফতার করেন।
পুলিশ কমিশনার জানান, হারুনের মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে। সেটি ফরেনসিক ল্যাবে পরীক্ষা করা হবে। এতে বোঝা যাবে, মোবাইল ফোন দিয়ে হারুন আরও কোনো তরুণীর সঙ্গে এমন প্রতারণা করেছেন কি-না।