রবিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

বিদেশে চাকরির নামে সপ্তাহে ১৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ

অধরা চক্রের মূল হোতা

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিদেশে চাকরি দেওয়ার নামে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে কয়েক লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রতারণার ফাঁদ পেতে সপ্তাহে ১২-১৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্রবার রাতে রাজধানীর কল্যাণপুর থেকে এদের গ্রেফতার করে ডিবির লালবাগ বিভাগ। এরা হলেন কবির হোসেন, শামসুল কবীর ও ইয়াছিন আলী। এদের কাছ থেকে বিভিন্ন ব্যাংকের ২৫৭টি চেকবই, ২৩৪টি ডেবিট কার্ড, আটটি মোবাইল ফোন সেট ও ১১টি সিম জব্দ করা হয়েছে। প্রত্যেকের নামে কদমতলী থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে। তবে অধরা রয়ে গেছেন মূল হোতা। গতকাল দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার জানান, ‘ড্রিম জবস ইন কানাডা’ নামে কথিত প্রতিষ্ঠানের হয়ে প্রতারক চক্রটি বিভিন্ন গ্রুপে তৎপরতা চালিয়ে আসছে। চক্রের একটি গ্রুপ প্রথমে কারও সঙ্গে যোগাযোগ করে নিবিড় বন্ধুত্ব গড়ে তোলে। পরে ফেসবুকে বিদেশে চাকরির অফার দিয়ে চাকরিপ্রত্যাশীদের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জার ও ইমেইলে যোগাযোগ করে।

চক্রের সদস্যরা চাকরিপ্রত্যাশীদের বিভিন্ন ফির জন্য ব্যাংকে টাকা জমা দিতে বলেন। এ ছাড়া হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বরও দেন তারা। এ ছাড়া একই চক্রের প্রথম গ্রুপের সদস্যরা ফেসবুকে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে উপহার পাঠানোর কথা বলেন। পরে কাস্টমস কর্মকর্তা সেজে ফোন করেন। দ্বিতীয় গ্রুপ বিভিন্ন নামে ব্যাংকে হিসাব খোলে। এসব সদস্য কমিশনের বিনিময়ে নিজের বৈধ জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে বিভিন্ন ব্যাংকে হিসাব খুলতে থাকেন। পরে তারা বারবার বাসা ও মোবাইল নম্বর পরিবর্তন করেন। চক্রের তৃতীয় গ্রুপ এসব ব্যাংক হিসাবধারীর স্বাক্ষরিত চেকবইয়ের পাতা, এটিএম কার্ড ও কার্ডপিন কুরিয়ারের মাধ্যমে সংগ্রহ করে। চতুর্থ গ্রুপ প্রতিদিন বিভিন্ন ব্যক্তির জমা করা টাকা চেক বা কার্ডের মাধ্যমে উঠিয়ে একজন ম্যানেজারের হাতে তুলে দেয়। ম্যানেজার এ টাকা তাদের কথিত বসের হাতে পৌঁছান। এভাবে সাপ্তাহিক বন্ধ ছাড়া প্রতিদিন ১২ থেকে ১৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে চক্রটি।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে, গ্রেফতার কবির হোসেন অর্থ সংগ্রহ করে ম্যানেজারের হাতে পৌঁছে দিতেন। তার সহযোগী হিসেবে কাজ করেন ইয়াসিন। আর শামসুল কবীর হলেন ব্যাংক হিসাবধারী। তারা সবাই মাসিক ২৫-৩০ হাজার টাকা বেতনে বিভিন্ন স্তরে কাজ করেন। এরা একে অন্যকে চেনেন না। ফোনে ফোনে বা হোয়াটসঅ্যাপে তাদের মধ্যে যোগাযোগ হয়। অনেকটা কাটআউট পদ্ধতি ব্যবহারে অপকর্ম করছেন তারা।

হাফিজ আক্তার বলেন, ‘আমরা এখনো বসকে শনাক্ত করতে পারিনি তবে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আমরা প্রাথমিকভাবে চাইছি যাতে নতুন করে আর কেউ প্রতারিত না হন।’

সাধারণদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘কারও প্রলোভনে পড়ে প্রতারিত হওয়ার আগে খোঁজ নিন। চাকরি কখনো এভাবে মেলে না, তা আগে বুঝুন। আর কুরিয়ার পারসেল, উপহার প্রতারণার বিষয়ে ডিবি পুলিশ অনেক অভিযান পরিচালনা করেছে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর