বৃহস্পতিবার, ২৬ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

কাউন্সিলর মাসুমকে আসামি করে মামলা গ্রুপ লিডার উজ্জ্বলও পুলিশের কবজায়!

যাত্রাবাড়ীতে পরিবহন শ্রমিক খুন

নিজস্ব প্রতিবেদক

চাঁদাবাজি এবং সিটি টোল ওঠানো নিয়ে দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বের জেরেই খুন হয়েছেন যাত্রাবাড়ীর পরিবহন শ্রমিক ইমরান হোসেন। নিহত ইমরানকে আল আমীন গ্রুপের সদস্য মনে করেই খুন করে উজ্জ্বল গ্রুপের সদস্যরা। ইমরান পিকআপচালকের পাশাপাশি কাঁচাবাজারে পিকআপ এবং  ট্রাকের কুলি মজুরির টোল আদায় করতেন। অন্যদিকে ২৪ জানুয়ারি রাতে এ ঘটনায় ২২ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেছেন নিহত ইমরানের স্ত্রী পপি আক্তার। মামলায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৫০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মাসুম মোল্লাকে প্রধান আসামি ও তার ভাগনি জামাই মো. আকরাম উজ্জামান ওরফে উজ্জ্বল মোল্লাকে দুই নম্বর আসামি করা হয়। এর আগে এ ঘটনায় গ্রেফতার আটজন আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। এর মধ্যে গ্রুপ এজাহারভুক্ত ছয়জন। গ্রুপ লিডার উজ্জ্বলকে আটক করা হয়েছে বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া এবং পরিকল্পনাকারীদের বিষয়ে তারা এরই মধ্যে নিশ্চিত হয়েছেন।

নিহত ইমরানের স্ত্রী পপি আক্তার মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন, তার স্বামী ইমরান পেশায় পিকআপচালক। ঢাকার যাত্রাবাড়ীর দক্ষিণ কাজলা নয়ানগরে ভাড়া বাসায় তারা বসবাস করতেন। পাশাপাশি কাঁচাবাজারে পিকআপ, ট্রাকের কুলি মজুরির টোল আদায় করতেন ইমরান। সোমবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে যাত্রাবাড়ী থানার কাঁচাবাজারের উদ্দেশে রওনা হন ইমরান। রাত সাড়ে ১১টার দিকে খবর পাই যে, টোল আদায়কে কেন্দ্র করে আমার স্বামী খুন হয়েছেন। মামলার দুই নম্বর আসামি উজ্জ্বল, তার সহযোগী মোহাম্মদ আলী ও মো. আরিফ চাপাতি, ছুরি ও রামদা দিয়ে ইমরানকে কুপিয়ে হত্যা করেন। ইমরানকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাসুম মোল্লা। এ ঘটনায় তিনি জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

ঢাকা মহানগর পুলিশের ওয়ারী বিভাগের উপ কমিশনার জিয়াউল হক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, হত্যাকান্ডের মোটিভ সম্পর্কে আমরা এরই মধ্যে নিশ্চিত হয়েছি। আশা করছি, খুব শিগগিরই বিষয়টি আপনাদের জানাতে পারব। উজ্জ্বলকে গ্রেফতারের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি তাকে গ্রেফতারের জন্য। হয়তো খুব শিগগিরই তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হব। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র বলছে, যাত্রাবাড়ী কাঁচামালের আড়তে সিটি টোলের নামে উজ্জ্বলের লোকজন আগে চাঁদা তুলতেন। প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে এই চাঁদা তুলছিলেন আল-আমিনের লোকজন। এ নিয়ে দুই পক্ষের দ্বন্দ্ব চলছিল। চাঁদা তোলার  নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উজ্জ্বলের লোকজন কয়েক দিন আগে আল-আমিনের লোকজনকে মারধর করেন। সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে আবারও হামলা করতে আসে তার লোকজন। আল-আমিনের   দলের সদস্য মনে করে ইমরানসহ তিনজনের ওপর তারা হামলা চালান।

 ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে ইমরানের মৃত্যু হয়। কাউন্সিলর মাসুম মোল্লা ও উজ্জ্বল ছাড়াও মামলার অন্য আসামিরা হলেন- মো. মুস্তাকিম, মো. শুভ, মোহাম্মদ আলী, মো. আরিফ, তানজিল মিয়া, বুলু বাবু, পলাশ, মো. জামাল, রাজিব, রমজান মোল্লা, জাহিন, মো. দেলা, মো. হাসান, মো. সাগর, মো. রাজু, মো. সুমন, ফয়সাল, পারভেজ, মো. সোহেল ও মো. রাজন। মামলায় আরও ২০-২৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। তারা সবাই মাসুম মোল্লা ও উজ্জ্বলের সহযোগী হিসেবে পরিচিত।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর