যৌন হয়রানি ও তদন্তের নামে প্রহসনের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে রাজধানীর শেরে বাংলা বালিকা মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে তারা এ মানববন্ধন করেন। এ সময় বক্তারা বলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড যৌন হয়রানির ঘটনা তদন্তের নামে প্রহসন করেছে। আমরা এই তদন্ত প্রত্যাখ্যান করছি। তদন্তকারী ব্যক্তিরা কোথাও আমাদের বক্তব্য তুলে ধরেনি। যৌন নিপীড়নের বিষয়ে কারও কথা শোনেননি। পুরো তদন্তে গভর্নিং বডির তৎকালীন সভাপতি রিয়াজ উদ্দিনকে নির্দোষ প্রমাণ করেছে বলে অভিযোগ করেন বক্তারা। অথচ যৌন হয়রানির ঘটনা স্থানীয় এমপি ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অবহিত হওয়ার পর রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির সভাপতির পদ ছাড়তে বাধ্য করা হয়। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক পদ থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়। কিন্তু বাধ্য হয়ে পদ ছাড়লেও রিয়াজ ও তার অনুসারী-সহযোগীরা এখনো আমাদের নিয়মিত ভয়-ভীতি এবং হুমকি দিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন শেরে বাংলা বালিকা মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। তারা দুর্নীতি দমন কমিশন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড এবং স্থানীয় এমপির প্রতিনিধির সমন্বয়ে পুনরায় তদন্ত করার দাবি জানান।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ২০২১ সালের ২৯ অক্টোবর রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ শেরে বাংলা বালিকা মহাবিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির সভাপতি হিসেবে যোগদান করার পর থেকে স্কুলে বিভিন্ন অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটে। তিনি ক্ষমতাশীল ব্যক্তির দোহাই দিয়ে প্রতিষ্ঠানটিতে ভয়াবহ পরিবেশ তৈরি করেন। তার অনৈতিক আচরণে শিক্ষক ও ছাত্রী প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হয়েছে। এর ফলে এক পর্যায়ে বিদ্যালয়ে ছাত্রী সংখ্যা কমে যায়।
শারীরিকভাবে হেনস্তা হওয়ার ভয়ে অভিভাবকরা মেয়েদের স্কুলে পাঠাতেন না। নারী শিক্ষকরাও যৌন হয়রানির শিকার হয়। তার কুপ্রস্তাবে রাজি না হলে বিভিন্ন নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তোফায়েল আহমদকে কয়েক দফা মৌখিকভাবে জানালেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে বাধ্য হয়ে স্থানীয় এমপি ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বিষয়টি অবহিত করা হয়।মানববন্ধনে বক্তব্য দেন শেরে বাংলা বালিকা মহাবিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক হামিদা আক্তার, সহকারী শিক্ষক আকলিমা আক্তার, সৈয়দা মেহনাজ নাইয়ারা, আলেয়া আক্তার, রেখা মন্ডল দিনা প্রমুখ।