রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলের প্রকৃতিতে এখন বইছে তাপপ্রবাহ। গরমে মানুষজনের জীবন ওষ্ঠাগত। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৫ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে। উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলার মধ্যে ৬ জেলায় এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অফিস স্থাপন করা হয়নি। আবহাওয়ার খবর জানতে ওই জেলাগুলোর মানুষকে নির্ভর করতে হয় পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোর ওপর। ফলে উত্তরাঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঝড়-বৃষ্টিসহ দুর্যোগের খবর সঠিকভাবে পাচ্ছেন না ওইসব জেলার মানুষ। আদিম যুগের মতো ওইসব জেলার মানুষ আকাশের রং দেখে ধারণা করেন আজ ঝড়-বৃষ্টি হবে কি না।
জানা গেছে, উত্তরাঞ্চলের রংপুর বিভাগের তিন জেলা এবং রাজশাহী বিভাগের ৩ জেলায় কোনো আবহাওয়া অফিস নেই। রংপুর, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, রাজশাহী, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, পাবনা ও নওগাঁ জেলায় আবহাওয়া অফিস রয়েছে। এ ছাড়া রংপুর বিভাগের লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, ঠাকুরগাঁও এবং রাজশাহী বিভাগের জয়পুরহাট, নাটোর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে কোনো আবহাওয়া অফিস নেই। এসব জেলায় আবহাওয়া অফিস না থাকায় সঠিক তথ্য পাচ্ছে না ওইসব এলাকার মানুষ। সূত্রমতে, লালমনিরহাট জেলার মানুষ রংপুর থেকে, গাইবান্ধা ও জয়পুরহাট জেলার মানুষ বগুড়া থেকে, ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষ দিনাজপুর থেকে এবং নাটোর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার মানুষ রাজশাহী থেকে আবহাওয়ার তথ্য নিচ্ছেন। ওইসব জেলার মানুষ তাপমাত্রা, ঝড়ের পূর্বাভাসসহ কোনো কিছুই পাচ্ছেন না। এই বঞ্চনা চলে আসছে যুগ যুগ ধরে। আবহাওয়াবিদদের তথ্য অনুযায়ী জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে উত্তরাঞ্চলের প্রকৃতিতে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। জীববৈচিত্র্যও হুমকির মুখে পড়েছে। শীতকালে প্রচ শীত এবং শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায় এই অঞ্চলে। গ্রীষ্মকালে টর্নেডো, অবিরাম বর্ষণ, প্রচ তাপদাহ বন্যাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ লেগেই আছে। বলা চলে, প্রায় ১২ মাসই উত্তরাঞ্চলের মানুষ নানা প্রতিকূলতাকে মোকাবিলা করে চলছে। এই অবস্থায় আবহাওয়া অফিস না থাকাটা ওইসব এলাকার মানুষের দুর্ভাগ্য বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
রংপুর অফিসের আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজার রহমান বলেন, উত্তরাঞ্চলের ৬ জেলায় আবহাওয়া অফিস না থাকায় ওইসব জেলার মানুষদের তথ্য পেতে সমস্যা হচ্ছে। তিনি বলেন, আমরাও চাই দ্রুত ওইসব জেলায় আবহাওয়া অফিস স্থাপন করা হোক।