খুলনা সিটি করপোরেশন ও সড়ক বিভাগের মধ্যে কোনো সমন্বয় নেই। এর ফলে খুলনা মহানগরীর অনেক উন্নয়ন ও সৌন্দর্যবর্ধনের কাজে বিপত্তি দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে অনুমতি না নেওয়া ও নকশা নিয়ে আপত্তির কারণে খুলনা সিটি করপোরেশনে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ আটকে গেছে। এরই মধ্যে পিটিআই মোড়ে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণকাজে আপত্তি দিয়েছে সড়ক বিভাগ।
কর্মকর্তারা বলছেন, সিটি করপোরেশন যে স্থানে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করছে সেটি মূলত সড়ক ও জনপথের জায়গা। সড়কের জায়গা আটকে ব্রিজ নির্মাণ করলে ভবিষ্যতে সেখানে উন্নয়নমূলক কাজ ব্যাহত হবে। এখানে সড়ক সংকুচিত হলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়বে। সড়কের জায়গা নিয়ে আপত্তি ওঠার পরই টনক নড়ে সিটি করপোরেশনের। দেখা যায় শুধু পিটিআই মোড় নয়, আলোচনা ছাড়াই সড়ক বিভাগের মোট ১২টি স্থানে সৌন্দর্যবর্ধনের জায়গা নির্ধারণ করেছে কেসিসি। কিন্তু সেই জায়গাগুলো সড়ক বিভাগের কাজ করার আগে কেসিসি সড়ক বিভাগকে না জানিয়েই উন্নয়ন ও সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ শুরু করে। কিন্তু এখন সড়ক বিভাগ সেই সব কাজ আটকে দিয়েছে।
যদিও যেখানে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ হয়েছে সেখানের পরিবেশ অনেক বদলে গেছে বলে দাবি করছেন কর্মকর্তারা।
এদিকে প্রায় ১১ কোটি টাকার প্রকল্পে মেয়াদ শেষ হতে বাকি মাত্র দুই মাস। শেষ মুহূর্তে তাড়াহুড়ো নতুন কিছু স্থানের তালিকা করে সেখানে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেসিসি।
জানা যায়, নগরীতে যানবাহনের অত্যাধিক চাপ বৃদ্ধি পেলে গুরুত্বপূর্ণ ২২টি মোড়ে প্রশস্ততা বৃদ্ধি ও সৌন্দর্যবর্ধনের উদ্যোগ নেয় কেসিসি। খুলনা নগরীর ‘গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা উন্নয়ন ও পুনর্বাসন’ প্রকল্পের আওতায় ময়লাপোতা মোড়, সোনাডাঙ্গা থানা মোড়, খুলনা মেডিকেল কলেজের সামনের অংশ, বয়রা বাজার মোড়, বয়রা মহিলা কলেজ মোড়, শিববাড়ি মোড়, বৈকালী মোড়, গোয়ালখালী মোড়, নতুন রাস্তার মোড়, দৌলতপুর মহসিন মোড়সহ ২২টি মোড়ের প্রশস্ততা বৃদ্ধি ও সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ শুরু হয়। কিন্তু শুরুতেই ময়লাপোতা মোড়ের রাস্তা বন্ধ করে স্থাপনা নির্মাণকাজে বাধা দেয় নাগরিক সংগঠনের নেতারা। এরপর পিটিআই মোড়ের ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণে আপত্তি দেয় সড়ক বিভাগ। ফলে প্রকল্প বাস্তবায়নই এখন অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে।
কেসিসি প্রধান প্রকৌশলী মশিউজ্জামান খান জানান, পিটিআই মোড়ে ফুটওভার ব্রিজ, কিছু মোড়ে ফোয়ারা নির্মাণ, নতুন ফুটপাত, সড়ক বিভাজক, বসার জায়গা ও আধুনিক ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার কথা ছিল। কিন্তু সড়ক বিভাগের আপত্তিতে আটটি স্থানে কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী তানিমুল হক বলেন, পিটিআই মোড়ে সড়কের জায়গা আটকে ফুটওভার ব্রিজ করা হলে ভবিষ্যতে সেখানে সড়ক বিভাগের উন্নয়ন কাজ ব্যাহত হবে। ফলে কেসিসিকে নকশা পরিবর্তন করে কাজ করতে বলা হয়েছে। কেসিসির উপসহকারী প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামান জানান, প্রকল্পে আর দুই মাস বাকি আছে। ফলে নতুন কোনো স্থান বাছাই করে সেখানে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করা যায় কি না ভাবা হচ্ছে।