কর্ণফুলী নদীর তীরবর্তী কোরিয়ান এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন (কেইপিজেড)। নিজস্ব বিদ্যুৎ, হাসপাতাল, টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট, বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশসহ পরিকল্পিত শিল্প এলাকা। ফলে শিল্প এলাকাটিতে দিন দিন বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের সংখ্যা। দীর্ঘ দুই যুগ পর কেইপিজেডের ভূমি জটিলতা নিরসনে এ সম্ভাবনা বেড়েছে কয়েক গুণ। কেইপিজেডের নিজস্ব ৪৮ শিল্পকারখানার পাশাপাশি বর্তমানে আমেরিকা ও জার্মানির তিনটি কারখানা চালু রয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে এখানে আগামী তিন বছরের মধ্যে ৭০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে।
কেইপিজেডের উপমহাব্যবস্থাপক মুশফিকুর রহমান বলেন, ভূমি জটিলতার কারণে নানান সুবিধা থাকার পরও অনেক বিনিয়োগকারী ফিরে গেছে। জটিলতা নিরসন হওয়ায় বিনিয়োগকারীরা পজিটিভ মনোভাব পোষণ করছেন। এখন কেইপিজেডে ৩৩ হাজার লোক কাজ করছে। জানা গেছে, এ শিল্পাঞ্চলের জন্য ১৯৯৭ সালে ২ হাজার ৪৯২ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। ১৯৯৯ সালে অধিগ্রহণকৃত জমি কেইপিজেড কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তর করে সরকার। কারখানা স্থাপন ও উৎপাদনে যায় ২০১১ সালের অক্টোবর মাসে।
কিন্তু জমি আয়ত্তে থাকলেও মালিকানা স্বত্ব বা দলিল ছিল না। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে কেইপিজেড কর্তৃপক্ষের কাছে ২ হাজার ৪৮৩ একর জমির দলিল হস্তান্তর করেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম। এর মাধ্যমে মালিকানা স্বত্ব ফিরে পেয়েছে কোরিয়ান ইপিজেড।
এদিকে, ভূমিসংক্রান্ত জটিলতা নিরসন করায় সরকারকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন ইয়ংওয়ান করপোরেশনের চেয়ারম্যান ও সিইও কিহাক সাং। চিঠিতে তিনি বলেন, দলিল সম্পাদনে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং জনগণের সমৃদ্ধিতে আমাদের আত্মবিশ্বাস ও সংকল্পকে পুনরায় জাগ্রত করেছে। ভবিষ্যতে আপনাদের অব্যাহত সমর্থনের জন্য উন্মুখ আছি আমরা।
কেইপিজেড সূত্রে জানা যায়, শিল্প এলাকাটি পরিবেশবান্ধব। প্রায় ৮২৩ একর জায়গা সবুজায়নের জন্য রাখা হয়েছে। ওপেন স্পেস রয়েছে প্রায় ৫০০ একর। ৪০০ একরে গড়ে উঠেছে ৪৮টি কারখানা। বিদেশি কিংবা ইয়ংওয়ানের নিজস্ব বিনিয়োগের জন্য আরও অন্তত ৪০০ একর জায়গা রয়েছে। নিজস্ব বিনিয়োগ ও রপ্তানিতে প্রতি বছরই এগিয়ে যাচ্ছে কেইপিজেড। ২০১২ সালে উৎপাদন শুরুর পর ১৩ বছরে রপ্তানি ছাড়িয়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রথম সাত বছরে রপ্তানি ছিল মাত্র ৫ লাখ ডলার। সামনের দিনগুলোতে আইটি খাতে বড় বিনিয়োগের আশা করছে কেইপিজেড।