করোনাভাইরাস ঝুঁকিতে রয়েছে মাদারীপুর জেলা। ভাইরাস সংক্রমণ রোধে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার ওষুধ, কাঁচামাল ও মুদি দোকান ছাড়া সব ধনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও গণজমায়েত ও গণপরিবহন পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করেছে উপজেলা প্রশাসন।
জানা গেছে, সম্প্রতি সময় বিভিন্ন দেশ থেকে তিন সহস্রাধিক প্রবাসী মাদারীপুর ফিরেছেন। এদের বড় একটি অংশই এসেছেন করোনা আক্রান্ত দেশ ইতালি থেকে। বিদেশ ফেরত এসব লোকজন স্বাস্থ্য বিধি মেনে না চলার কারণে ঝুঁকিতে পড়েছে পুরো মাদারীপুর জেলা।
বিশ্বস্থ সূত্রের তথ্যমতে, সারা দেশে মোট আক্রান্ত ১৭জন। এদের মধ্যে পাঁচজনই মাদারীপুরের বাসিন্দা। দুই ইটালি প্রবাসীর মাধ্যমে তার পরিবারের সদস্যদের মাঝে এই ভাইরাস ছড়িয়েছে।
বৃহস্পতিবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, করোনার কারণে প্রয়োজনে শিবচর ও মাদারীপুর লকডাউন করা হবে।
তিনি আরও বলেন, শিবচর ও মাদারীপুর ভালনারেবল। এ জেলায়ই করোনা আক্রান্ত দেশ থেকে বেশি মানুষ এসেছে। সেখানেই বেশি নজরদারি করা হচ্ছে। প্রয়োজনে লকডাউন করা হবে।
স্থানীয়দের দাবী, মাদারীপুরের ইটালি প্রবাসীদের পরিমাণ বেশি হওয়ায় করোনা ঝুঁকিতে উদ্বিগ্ন তারা। ইটালি ফেরত অনেক প্রবাসীই মানছেন না হোম কোয়ারেন্টাইন। নিজেদের ইচ্ছে মতো ঘুরে বেড়াচ্ছেন ওই সকল প্রবাসীরা। তাছাড়া মসজিদে জামাতের নামাজও পড়ছেন। কেউ নিষেধ করলে তাদের সঙ্গে করছে অসদাচরণ।
এদিকে, করোনাভাইরাস আক্রান্তের আশঙ্কায় হোম কোয়ারেন্টাইনে না থেকে বাহিরে ঘোরা ফেরার দায়ে মাদারীপুরে দুই প্রবাসীকে ২৫ হাজার টাকা আর্থিক জরিমানা অনাদায়ে দুই মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এদিকে, করোনার কারণে বেড়েছে নিত্য-প্রয়োজনীয় জিনিস পত্রের দাম।
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, মাদারীপুরে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কায় ২৪৫ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়। এছাড়াও চারজনকে রাখা হয়েছে আইসোলেশনে।
স্থানীয়রা জানান, এক ইতালি প্রবাসী সম্প্রতি মাদারীপুরের শিবচরে আসেন।
করোনাভাইরাসের বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দিলে তার স্ত্রী সন্তান, শাশুড়িসহ চারজনকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। এছাড়া তার সন্তানরা যাদের সঙ্গে সংস্পর্শে এসেছে এমন ১৯ শিক্ষার্থীকে চিহ্নিত করে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়।
শিবচরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, ওষুধ, কাঁচামাল ও মুদি দোকান ছাড়া সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও গণজমায়েত পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক ওয়াহিদুল ইসলাম জানান, আমরা স্বাস্থ্য বিভাগের সহযোগিতায় প্রতিটি ইউনিয়নের বিদেশ ফেতরদের তথ্য সংগ্রহ করে বাধ্যতামূলক হোম কোয়ারেন্টাইনে রেখেছি। এরপরে যদি কেউ আদেশ অমান্য করে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত জেল-জরিমানা করা হচ্ছে। কাউকে ছাড়া দেয়া হবে না।
মাদারীপুরের সিভিল সার্জন ডা. শফিকুল ইসলাম বলেন, মাদারীপুর ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সদর হাসপাতালের নতুন ভবনের ১০০ শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। করোনাভাইরাস রোধে স্বাস্থ্য বিভাগ বিভিন্ন সচেতনতামূলক কাজ করছে বলেও জানান তিনি।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত