বিশ্বব্যাপী মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বাহরাইন সরকার। করোনার করুণ পরিণতির হাত থেকে দেশ এবং দেশের মানুষকে রক্ষার জন্য নানা সচেতনতার পাশাপাশি প্রাক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এবার জুমার নামাজ স্থগিত করেছে দেশটির সরকারের সিদ্ধান্ত মতে মাসজিদ পরিচালনা প্রতিষ্ঠান আওয়াকাফ।
বৃহস্পতিবার বাদ মাগরিব বিষয়টি মসজিদে মসজিদে সবাইকে জানিয়ে দিয়েছেন মসজিদে কর্মরত ইমামরা। তবে নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ হবে মসজিদে সীমিত সময়ে (১০ মিনিটে)।
এছাড়া পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত দেশের সরকারি-বেসরকারি সকল স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
১৮ মার্চ থেকে সরকারের ঘোষণা মতে বন্ধ রয়েছে রেস্তোরাঁগুলোতে বসে কোন কিছু খাওয়ার প্রবণতা। শুধুমাত্র ঘরে নিয়ে যাওয়ার নিয়ম চালু রয়েছে। নিষিদ্ধ করা হয়েছে সব ধরনের জনসমাগম। বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে শিশা ক্যাফেগুলোতে শীশা পরিবেশন। কেবল খাবার এবং পানীয় ডেলিভারি এবং গ্রহণ করা যাবে। এছাড়া সিনেমা হল, জিম ও বেসরকারি খেলাধুলার স্থানগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
বাহরাইন ও বাংলাদেশের জনসমাগম নীতিতে সীমিত করা হয়েছে দূতাবাসের স্বাভাবিক কার্যক্রম। সর্বোচ্চ সতর্ক ও সচেতনতার প্রতি গুরুত্ব দিয়েছে নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ড. নজরুল ইসলাম। সীমিত করা হয়েছে বিমান চলাচল। শুধুমাত্র এমিরেটসের একটি ফ্লাইট প্রতিদিন স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় বাহরাইন ছেড়ে বাংলাদেশের উদ্দেশে উড়াল দেয়। সেটিও যেকোনও সময় বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
অন্যদিকে, উচ্চমানের তিনস্তরের কোয়ারেন্টাইন নির্মাণ করা হয়েছে। পরীক্ষা-নীরিক্ষা ও স্ক্রিনিং জোরদার করা হয়েছে দেশটিতে। এমনকি প্রয়োজনে ঘরে ঘরে মোবাইল টিমে পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। স্বাস্থ্যসম্মত খাবার ও মূল্য নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত দোকানে দোকানে মনিটরিং চালিয়ে যাচ্ছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও ভোক্তা অধিকার প্রতিষ্ঠান।
বিদেশ থেকে খাদ্য আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে দেশটির সরকার। সরকারি বিভিন্ন অফিসগুলোতে কার্যক্রম ধীরগতি ও সীমিত করা হয়েছে।
তবে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থায় স্বাভাবিক কার্যক্রম চলবে বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশ করা হয়েছে।
বাহরাইনে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ১৭৭ জন। এর মধ্যে গুরুতর অবস্থায় আছে ৩ জন। মারা গেছেন এক নারী। চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ১০০ জন।
বিডি প্রতিদিন/কালাম