প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের তাণ্ডবে বিপর্যস্ত গোটা বিশ্ব। এই ভাইরাসে থাবায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে পুরো বিশ্ব। এমনকি, বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাষ্ট্র আমেরিকা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এই ভাইরাসে। দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও আক্রান্ত হয়েছেন করোনায়। সংক্রমিত হয়েছেন তার স্ত্রী মেলানিয়াও।
এখন পর্যন্ত (বুধবার সকাল সোয়া ৮টা) আমেরিকায় এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ৭৭ লাখ ২২ হাজার ৭৪৬ জন। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ১৫ হাজার ৮২২ জনের।
দেশটিতে এখন ৭৮ লাখ ৩৯ হাজার ৬ শতাধিক মানুষের শরীরে সক্রিয় করোনাভাইরাস। এর মধ্যে ৬৭ হাজার ৮৬১ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এই যখন আমেরিকায় সংক্রমণের অবস্থা তখন করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পরপরই বিশেষ ওষুধে চিকিৎসা নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
বিশেষ ওই ওষুধের মিশ্রণে চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তির মাত্র তিন দিনের মাথায় হোয়াইট হাউজে ফিরেও গেছেন তিনি।
জানা গেছে, ট্রাম্পই এই গ্রহের একমাত্র ব্যক্তি যিনি করোনা চিকিৎসায় এই বিশেষ ওষুধের মিশ্রণ পেয়েছেন। সিএনএন’র এক প্রতিবেদনে এ দাবি করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হাসপাতালে ভর্তির আগে ট্রাম্পকে একটি অ্যান্টিবডি থেরাপি দেওয়া হয়, যা স্থানীয় রেজেনেরন ফার্মাসিউটিক্যালের পরীক্ষামূলক অবস্থায় রয়েছে।এটি করোনাভাইরাসের মাত্রা কমাতে পারে এবং ট্রায়ালে এই থেরাপির ইতিবাচক ফলও দেখা গেছে। তবে আমেরিকার খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন এখন পর্যন্ত জরুরি পরিস্থিতিতে এই থেরাপি ব্যবহারের অনুমোদন দেয়নি।
কিন্তু কোম্পানিটির ভাষ্য, ট্রাম্পের চিকিৎসকরা বিশেষ পরিস্থিতি বিবেচনায় ওষুধটি সরবরাহের অনুরোধ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতেই তারা এই ওষুধ সরবরাহ করে।
আমেরিকার মায়ো ক্লিনিক জানিয়েছে, সাধারণ মানুষের এই ওষুধ এভাবে পাওয়ার সুযোগ নেই। এটি পাওয়ার বিষয়টি দীর্ঘমেয়াদি ও চ্যালেঞ্জিং প্রক্রিয়া। তবে ট্রাম্প অ্যান্টিবডি থেরাপিটি পেয়েছেন। করোনা শনাক্ত হওয়ার পরদিনই তাকে তা দেওয়া হয়। হোয়াইট হাউজ ও ট্রাম্পের চিকিৎসকরা এই তথ্য জানিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে মহামারী বিশেষজ্ঞ ডা. সীমা ইয়াসমিন বলেন, এটা আমেরিকার প্রেসিডেন্টের অসুস্থতার ব্যাপার। এ জন্য তা ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু ইতোমধ্যে ২ লাখ ১০ হাজার আমেরিকান করোনায় মারা গেছেন। তারা এই ধরনের চিকিৎসা বা ওষুধ পাননি। তাছাড়া আমেরিকার বিভিন্ন হাসপাতালে এখনও হাজার হাজার আমেরিকান চিকিৎসাধীন। তারাও এই চিকিৎসা পাচ্ছেন না।
ট্রাম্পকে অ্যান্টিবডি থেরাপির পাশাপাশি রেমডেসিভির ও ডেক্সামেথাসোনও দেওয়া হয়েছে। ট্রাম্পের ক্ষেত্রে এই তিনটি ওষুধের ব্যবহার প্রসঙ্গে জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির মেডিসিনের অধ্যাপক জনাথন রেইনার বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট (ট্রাম্প) সম্ভবত এই গ্রহের একমাত্র রোগী, যিনি এই বিশেষ ওষুধগুলোর মিশ্রণটি পেয়েছেন।’
সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ কোনও নাগরিক করোনায় সংক্রমিত হলে তিনি নিশ্চয়ই দেশটির প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মতো একই চিকিৎসা পাওয়ার আশা করবেন না। প্রেসিডেন্ট হিসেবে অতিরিক্ত মনোযোগের পাশাপাশি ট্রাম্পের সম্ভাব্য সর্বোচ্চ সেবা পাওয়ারই কথা।
বিডি প্রতিদিন/কালাম