২০ এপ্রিল, ২০২১ ২২:৩১
দেশকে লকডাউনের হাত থেকে বাঁচাতে হবে: মোদি

এখনই লকডাউনের পথে হাঁটছে না ভারত

অনলাইন ডেস্ক

এখনই লকডাউনের পথে হাঁটছে না ভারত

নরেন্দ্র মোদি

আবারও কি তাহলে ভারতে লকডাউনের ঘোষণা আসবে? দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার খবরটা ছড়ানোর পর থেকেই সেই জল্পনাই ঘুরপাক খাচ্ছিল। তবে ১৯ মিনিটের ভাষণে মোদি স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, এখনই লকডাউনের পথে হাঁটছে না দেশ। বরং ছোট ছোট কনটেনমেন্ট জোন, করোনাভাইরাস বিধি পালনের ওপর জোর দেওয়া হবে। সেইসঙ্গে রাজ্যগুলোকে আর্জি জানান, করোনা রোখার সর্বশেষ অস্ত্র হিসেবে যেন লকডাউনকে ব্যবহার করা হয়।

মোদি বলেন, ‘দেশকে লকডাউনের হাত থেকে বাঁচাতে হবে।’  তিনি তার ভাষণে ১০টি পয়েন্টে কথা বলেন। তা হলো- 

১) করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে দেশ আজ বড় যুদ্ধ করছে। কয়েক সপ্তাহ আগে পর্যন্ত পরিস্থিতি স্থিতিশীল ছিল। তারপর করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে। আপনারা যে যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন, তা জানি। পরিবারের সদস্যদের মতো আপনাদের সঙ্গে আমি আছি। 

২) চিকিৎসক, পুলিশ, সাফাইকর্মীদের প্রশংসা করলেন। নিজের পরিবারের কথা না ভেবে যেভাবে সমাজের জন্য কাজ করছেন, তা প্রশংসনীয়।

৩) গত কয়েকদিনে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, পদক্ষেপ করা হয়েছে, তা দ্রুতগতিতে পরিস্থিতির উন্নতি করবে। এবার ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে অক্সিজেনের চাহিদা বেড়েছে। সেই বিষয়টি সমাধানের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার, রাজ্য সরকার ও বেসরকারি ক্ষেত্র কাজ করছে।

৪) এবার করোনার সংক্রমণ বাড়তে ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলো উৎপাদনের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির তুলনায় বাড়ানো হচ্ছে উৎপাদন। সেইসঙ্গে হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা বাড়ানোর কাজ চলছে। কয়েকটি জায়গায় আক্রান্তের সংখ্যা বেশি হওয়ায় সেখানে বড় আকারে করোনা হাসপাতাল তৈরি করা হয়েছে।

৫) গত বছর যখন দেশে কয়েকজন করোনা আক্রান্তের হদিশ মিলেছিল, তখন থেকেই বিজ্ঞানীরা টিকা আবিষ্কারের চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন। এটা একটা দলগত প্রচেষ্টা। যে কারণে দুটি ভারতীয় প্রতিষেধক নিয়ে টিকাকরণ শুরু হয়েছে। টিকাকরণের শুরু থেকেই সব শ্রেণির মানুষের কাছে প্রতিষেধক দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।

৬) আগের মতোই সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে টিকা মিলবে। আমাদের সকলের চেষ্টা হল প্রাণ বাঁচানো। আর্থিক গতিবিধি এবং জীবিকার উপর যাতে ন্যূনতম প্রভাব পড়ে, সেই চেষ্টা করা হচ্ছে। সেজন্য দেশের কর্মশক্তিকে যত দ্রুত সম্ভব টিকাকরণ করা হবে।

৭) রাজ্য সরকারের কাছে অনুরোধ, যে শ্রমিকরা যেখানে আছেন, সেখানেই থাকার বিষয়ে আশ্বস্ত করুন। সেখানেই টিকা দেওয়া হবে। সেখানেই কাজ করা হবে।

৮) গতবারের তুলনায় এবারের পরিস্থিতি পুরোপুরি আলাদা। গত বছর গবেষণাগার ছিল না। পিপিই কিট অপ্রতুল ছিল। দেশের মানুষ ধৈর্য এবং সংযমের সঙ্গে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। এই কৃতিত্ব দেশবাসীর। 

৯) দেশবাসীর কাছে আবেদন, সংকটের সময় এগিয়ে আসুন। যাঁদের প্রয়োজন, তাঁদের সাহায্য করুন। যুব প্রজন্মের কাছে অনুরোধ, নিজেদের এলাকায় ছোটো ছোটো কমিটি তৈরি করে করোনা সুরক্ষাবিধি মেনে চলার শিক্ষা দিন। তাহলে কনটেনমেন্ট জোন, কার্ফুর প্রয়োজন পড়বে না। লকডাউন তো দূরের কথা। 

১০) ছোটোদের কাছে আমার অনুরোধ, বাড়িতে এমন নিয়ম চালু কর, যাতে তারা একেবারে প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে না বের হন। এই অবস্থায় দেশকে লকডাউন থেকে বাঁচাতে হবে। রাজ্যগুলোর কাছে আমার অনুরোধ, করোনা রোখার শেষ উপায় হিসেবে যেন লকডাউনকে বিবেচনা করা হয়। পরিবর্তে ছোট ছোট কনটেনমেন্ট জোনের ওপর জোর দিন।

সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস 
 
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ

 

 

 
 
 

 

 
 

সর্বশেষ খবর