লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় তীব্র গরম ও লোডশেডিংয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ২৪ ঘন্টার মধ্যে মাত্র চার ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এ উপজেলার জনগণ।
একদিকে প্রচণ্ড গরম অন্যদিকে লোডশেডিংয়ের কারণে শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে বয়োঃবৃদ্ধ মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়ায় মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটছে, ব্যাহত হচ্ছে বিদ্যালয়ে পাঠদান ও অফিস আদালতের কার্যক্রম। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মাত্র চার ঘণ্টা বিদ্যুৎ পাচ্ছে এ উপজেলার গ্রাহকরা।
উপজেলার চর আবাবিল গ্রামের মো. ইসমাইল হোসেন ও চরবংশী গ্রামের মো. আবুল কাশেম বলেন, সন্ধ্যায় এক ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকলে ছয় ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। দিনেও একই অবস্থা।
পৌর শহরের মধুপুর এলাকার লতিফ মিঝি বলেন, অস্বাভাবিক লোডশেডিংয়ের কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত। এখন লোকজনকে জেনারেটর ও সৌরবিদ্যুতের ওপর ভরসা রাখতে হচ্ছে। এতে ব্যয় অনেক বেড়ে গেছে।
রায়পুর পৌরসভার পানি সরবরাহ শাখা সূত্রে জানা গেছে, লোডশেডিংয়ের কারণে পৌরসভার ট্যাংকে পানি ওঠানোয় সমস্যা হচ্ছে। ফলে গ্রাহকদের জন্য নিরবচ্ছিন্নভাবে পানি সরবরাহ করা যাচ্ছে না।
পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আইনুল কবির মনির ও কেরোয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহাজান কামালসহ উপজেলার চারজন জনপ্রতিনিধি বলেন, গত এক সপ্তাহ থেকে রায়পুরে বিদ্যুতের নাজুক অবস্থা চলছে। শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় বিঘ্ন ঘটছে। কলকারখানা, ব্যবসা-বাণিজ্য, ব্যাংক-বীমা ও অফিসপাড়া সর্বত্রই স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
রায়পুর পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় প্রায় ৩৭ হাজার গ্রাহক রয়েছেন। চাহিদা প্রায় ১৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। কিন্তু পানপাড়া ও রায়পুরের বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে (সাবস্টেশন) বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে মাত্র চার মেগাওয়াট। এ দুই উপকেন্দ্র থেকে সাতটি ফিডারে গ্রাহকদের বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ কম থাকায় নিয়ম করে একটি ফিডার বন্ধ করে অন্যটি চালু করা হয়।
জানতে চাইলে রায়পুর পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ের (ডিজিএম) সুদাশ চন্দ্র দীক্ষিত বলেন, প্রয়োজনের তুলনায় সরবরাহ কম হওয়ায় সন্ধ্যার পর থেকে একটি ফিডার বন্ধ করে অন্যটি চালু করা ছাড়া উপায় থাকে না। ঘুরে ঘুরে বন্ধ ফিডারে আবার সংযোগ দিতে চার ঘণ্টার মতো সময় লেগে যায়। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। শিগগিরই অবস্থার উন্নতি হবে।
বিডি প্রতিদিন/২২ মে, ২০১৭/ফারজানা