মাদকসেবী ও বখাটেদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মুন্সিরহাট স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র। মাদকসেবীদের ইভটিজিংয়ের শিকার হয়ে ইউনিয়নের খিরনশাল বাজার এলাকায় অবস্থিত স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিতে বর্তমানে চিকিৎসা নিতে আসা কম ও মধ্যবয়সী নারীরাও হুমকিতে রয়েছে। মাদক গ্রহণ ও ব্যবসা রাতের অন্ধকারে জনপ্রিয় হলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তায় দিনের আলোতেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিতে অবাধে মাদক সেবন ও ব্যবসা করে আসছে চক্রটি।
এদিকে হাসপাতাল এলাকায় মাদক সেবনের অপরাধে ১১ জুন সিংরাইশ গ্রামের মো. হারুন ও পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা মনোয়ারার ছেলে মাসুদ (২১), একই গ্রামের মৃত বারেক মিয়ার ছেলে হাবিব এবং পাশ্ববর্তী ডাকরা গ্রামের আবুল হাশেমের ছেলে হৃদয়কে আটক করে পুলিশ। আটককৃতরা মাদকের মূল হোতা হিসেবে একই গ্রামের রুবেলের নাম বলায় গত সোমবার (১২ জুন) ৩ জন জামিনে বেরিয়ে ওই রাতেই ঘরে গিয়ে হাবিবকে এলাপাতাড়ি কুপিয়ে মারাত্মক আহত করে মাদক ব্যবসায়ী রুবেল। হাবিবের উপর হামলার প্রতিবাদে গত বুধবার গ্রামের গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ শালিশের মাধ্যমে রুবেলের ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী জানান, মহিলা ভিজিটর ও এলাকার প্রভাবশালীর ছেলে হওয়ায় মাসুদ বিনা বাঁধায় মাদকের আসর বসায় হাসপাতাল এলাকায়। দিনের আলোতেই হাসপাতাল এলাকায় মাদকের আসর বসালেও স্থানীয়রা কিছু বলার থাকলেও সাহস পায় না। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের উত্তক্ত করার অভিযোগও রয়েছে। এ ঘটনায় ইতিপূর্বে তার বিরুদ্ধে গ্রাম্য শালিসে বিচারও হয়েছে। এছাড়াও একাধিকবার গ্রেফতারও হয়েছে মাসুদ। স্থানীয়রা আরো জানায়, এলাকার এসব চিহিৃত মাদকসেবীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইন প্রয়োগের মাধ্যমেই সিংরাইশ, হাসপাতাল এলাকা এবং পাশ্ববর্তী এলাকা মাদকমুক্ত করা যাবে। এতে করে যুবসমাজও মাদকের ভয়াবহ গ্রাস থেকে মুক্ত হবে।
খিরনশাল স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের উপ-সহকারি কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার কামাল হোসেন জানান, ১১ জুন বিকেলে ৩ জন মাদকসেবীকে আটকের ঘটনার পর থেকে বর্তমানে হাসপাতাল এরিয়ায় বখাটে এবং মাদকসেবীদের আড্ডা সম্পূর্ণরুপে নিষিদ্ধ। যাদের আড্ডা অবস্থায় পাওয়া যাবে, তাদের আইনের হাতে সোপর্দ করা হবে। পাশাপাশি এ ঘটনায় সিকিউরিটি গার্ডকেও সতর্ক করা হয়েছে।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নাছির উদ্দিন জানান, পরিবার পরিকল্পনার আওতায় থাকায় খিরনশাল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে মাদকসেবীদের আড্ডা ও আটকের ঘটনাটি আমি শুনি নাই। তবে সরকারি প্রতিষ্ঠানে মাদক সেবন এবং আড্ডার ঘটনাটি উপজেলা পরিবার কল্যাণ অধিদপ্তরের সাথে আলোচনা করে দায়িদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার