গতকাল ছিল জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী অঞ্জনা রহমানের জন্মদিন। চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি অকালে মারা যান এই গুণী অভিনেত্রী। মৃত্যুর পর এটিই ছিল তাঁর প্রথম জন্মদিন। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো কেউ তাঁর কথা মনে রাখেনি। এমনকি শিল্পীদের দ্বিতীয় আবাস হিসেবে খ্যাত চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি, যেখানে তিনি ছিলেন একাধিকবার নির্বাচিত কর্মকর্তা। সেই সমিতিও তাঁর স্মরণে কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করেনি।
এ দেশের শিল্পীদের সহজেই ভুলে যাওয়া অনেক আগে থেকেই যেন একটি রেওয়াজে পরিণত হয়েছে।
অঞ্জনা পূর্ব পাকিস্তানের ঢাকার ঢাকা ব্যাংক কোয়ার্টারে এক সংস্কৃতিমনা পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাংলাদেশ চলচ্চিত্রের একসময়ের জনপ্রিয় অভিনয় শিল্পী অঞ্জনা নৃত্যশিল্পী থেকে নায়িকা হয়ে সর্বাধিক যৌথ প্রযোজনা এবং বিদেশি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। অঞ্জনার অভিনয় জীবন শুরু হয় ১৯৭৬ সালে। বাবুল চৌধুরী পরিচালিত ‘সেতু’ চলচ্চিত্রে প্রথম অভিনয় করেন তিনি। তবে অঞ্জনা অভিনীত ওই একই বছর মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম চলচ্চিত্র ‘দস্যু বনহুর’। ছবিতে তাঁর নায়ক ছিলেন সোহেল রানা। এ ছবির পর তাঁকে আর ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবতে হয়নি। ১৯৭৬ সালের এই সিনেমার পর টানা কাজ করেছেন অঞ্জনা। একে একে অভিনয় করেন ‘মাটির মায়া’, ‘অশিক্ষিত’, ‘চোখের মণি’, ‘সুখের সংসার’, ‘জিঞ্জির’, ‘অংশীদার’, ‘আনারকলি’, ‘বিচারপতি’, ‘আলাদীন আলীবাবা সিন্দাবাদ’, ‘অভিযান’, ‘মহান’, ‘রাজার রাজা’, ‘বিস্ফোরণ’, ‘ফুলেশ্বরী’, ‘রাম রহিম জন’, ‘নাগিনা’, ‘পরীণিতা’ ইত্যাদি বাণিজ্যিক সফল সিনেমায়। বাংলাদেশ ছাড়াও তিনি অভিনয় করেছেন ৯টি দেশের ১৩টি ভাষার সিনেমায়। অভিনয়ের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, আন্তর্জাতিক পুরস্কার, একাধিক জাতীয় স্বর্ণপদক ও বাচসাস পুরস্কার পেয়েছেন কয়েকবার। নৃত্যশিল্পী হিসেবেও অঞ্জনা পেয়েছেন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অনেক স্বীকৃতি। ‘পরিণীতা’ ও ‘গাঙচিল’-এ অভিনয়ের জন্য দুবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছেন। অঞ্জনা বিয়ে করেন পরিচালক আজিজুর রহমান বুলিকে। তাঁদের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়।