চট্টগ্রাম নগরীতে পুলিশের কোনো টহল কিংবা অভিযানের সময় কেউ অস্ত্র বের করলে আত্মরক্ষায় দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দিয়েছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ। নগরীর বন্দর থানা এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হামলায় এসআই আবু সাঈদ রানা আহত হওয়ার পর মঙ্গলবার রাতে ওয়্যারলেসে সিএমপি সদস্যদের উদ্দেশ্যে তিনি এই মৌখিক নির্দেশ দেন।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের একাধিক পুলিশ সদস্যের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
হাসিব আজিজ নির্দেশনায় বলেন, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগে যে অস্ত্র বহনের প্রাধিকার ছিল, তা অনুযায়ী এখন থেকে থানার মোবাইল পার্টি, পেট্রোল পার্টি, ডিবি ও চেকপোস্ট টিম আগ্নেয়াস্ত্র ও লাইভ অ্যামুনিশন নিয়ে বের হবে। রাবার বুলেট যথেষ্ট নয়। অস্ত্র বের করা মাত্র গুলি হবে—ধারালো হোক বা আগ্নেয়াস্ত্র। আত্মরক্ষা দণ্ডবিধি ৯৬ থেকে ১০৬ ধারার অধিকার।
তিনি আরও বলেন, বন্দর থানার ঘটনায় আমার অফিসারের মাথা প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যেত। আল্লাহ তাকে বাঁচিয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে লাশ ছাড়া টহল পার্টি ফেরত আসবে না।
অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, হামলার সময় রানার সঙ্গে থাকা দুই কনস্টেবল শটগান বহন করলেও গুলি ছোড়েননি। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন পুলিশ সদস্য বলেছেন, অনেকেই এখনো ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পরবর্তী জনআক্রোশের ট্রমায় ভুগছেন। অভিযানে গুলি চালালে পরবর্তীতে আইনি জটিলতায় পড়তে হয় বলেও তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার চট্টগ্রাম নগরীর বন্দর থানার সল্টগোলা এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা ঝটিকা মিছিল বের করছেন—এ তথ্য পেয়ে অভিযানে গিয়েছিলেন বন্দর থানার এসআই রানার নেতৃত্বে একটি টিম। এই সময় তল্লাশি চালাকালে রানার মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়। পরবর্তীতে বন্দর থানা এলাকায় যৌথবাহিনী অভিযান চালিয়ে ছুরি, ধারালো অস্ত্রসহ ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করে। এরপরই মঙ্গলবার রাতে পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ এক ওয়্যারলেস বার্তায় এসব নির্দেশনা দেন।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল