উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও কয়েক দিনের টানা প্রবল বৃষ্টির কারণে কুড়িগ্রামের সবকটি নদ নদীর পানি হুহু করে বাড়ছে। ফলে এসব নদীর চর ও দ্বীপচরের নিম্নাঞ্চলসমূহে পানি উঠে ঘরবাড়ি ও ফসলী জমি তলিয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়ে ফসলহানির আশংকা নদী অববাহিকার মানুষ ও কৃষকদের।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় সবকটি নদনদীর পানি খুবই দ্রুত গতিতে বাড়ছে। এতে দুধকুমর নদের পাটেশ্বরী পয়েন্টে পানি ৫৭ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্টে ১৬ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার মাত্র ১৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে, ধরলা নদীর সেতু পয়েন্টে ও ব্রহ্মপুত্র নদের চিলমারী, নুনখাওয়া ও হাতিয়া পয়েন্টেও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
ফলে নদনদীর অববাহিকার নিম্নাঞ্চলসমূহ প্লাবিত হয়ে পড়ে অন্তত ৮ হাজার মানুষ পানিতে বন্দি হয়ে পড়েছে। এসব এলাকার চরের ও দ্বীপচরের বেশ কিছু ঘরবাড়িতে পানি উঠে তারা উচু স্থানে গিয়ে আশ্রয় নিতে শুরু করেছেন। চরের কৃষি জমিগুলোতে পানি উঠে ঢেড়শ, শশা, পটল, ঝিঙে ও অন্য শাকসবজি, রোপা আমনসহ বীজতলা নিমজ্জিত হয়েছে। ইতোমধ্যেই ৩ দফা নদীগুলোর পানি বেড়ে গিয়ে চরের কৃষিজমি তলিয়ে যাওয়ায় মানুষজন পড়েছেন বিপাকে। জেলা কৃষি বিভাগের উপপরিচালক কৃষিবিদ আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, এখন পর্যন্ত চলতি বন্যা সিচুয়েশনে ৩১৫ হেক্টর জমির রোপা আমন ও বীজতলাসহ শাক সবজি তলিয়ে গেছে।
এদিকে, জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য বন্যা কবলিত নাগেশ্বরী, রাজারহাট,উলিপুর, চিলমারী, রৌমারী ও রাজিবপুরসহ এ ৬ উপজেলায় ইতোমধ্যেই খোলা হয়েছে ৬টি কন্ট্রোল রুম যা বন্যা পরিস্থিতি তদারকি করবে বলে জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে। জেলা ত্রাণ ও বন্যা পুনর্বাসন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলার ৯ উপজেলায় প্রত্যেকটিতে ৩২০প্যাকেট শুকনো খাবার মওজুদ রয়েছে। প্রয়োজনে তা বন্যার্তদের মাঝে বিতরণ করা হবে। এছাড়াও জেলায় ২ হাজার ৫শত শুকনো খাবার ও ৪ শত মে. টন চাল এবং ১৪ লাখ টাকা জমা রয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে শুকনো খাবার বিতরণ শেষ হলে কিংবা প্রয়োজনে সেখান থেকে বিতরণ করা হবে।