যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতির চাপের মধ্যেই ভারতে বাণিজ্য ঘাটতির রেকর্ড হয়েছে। এতে দেশটির অর্থনীতি ভীষণ চাপে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, জুলাই মাসে ভারতের পণ্য বাণিজ্য ঘাটতি বিগত আট মাসের সর্বোচ্চ ২৭ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। এর কারণ মার্কিন শুল্ক বৃদ্ধির আগে দেশটিতে আমদানি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা রফতানিতে মাঝারি বৃদ্ধিকে ছাড়িয়ে গেছে। এপ্রিল-জুলাই মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চালান গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২১ দশমিক ৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। যদিও দেশটিতে পাইকারি পণ্যের মূল্য গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে কমে গেছে।
বৃহস্পতিবার ভারত সরকারের প্রকাশিত পরিসংখ্যানে এই তথ্য উঠে এসেছে।
দেশটির সরকারি পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, গত এপ্রিল-জুলাই মাসে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের রফতানি এক বছর আগের ২৭ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে ৩৩ দশমিক ৫৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।
এর আগে, গত সপ্তাহে রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা অব্যাহত রাখায় ভারতীয় পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফলে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের রফতানি শুল্ক বেড়ে ৫০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। ভারতের ওপর আরোপিত এই শুল্ক যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য বাণিজ্যিক অংশীদারদের মধ্যে অন্যতম সর্বোচ্চ।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গত জুলাই মাসে ভারতের মোট বাণিজ্য ঘাটতি ২৭ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা অর্থনীতিবিদদের ২০ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলারের পূর্বাভাসের চেয়ে বেশি। এমনকি দেশটির এই বাণিজ্য ঘাটতি জুন মাসের ১৮ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলারের তুলনায়ও অনেক বেশি।
দেশটির সরকারি তথ্যানুযায়ী, জুলাইয়ে ভারতের পণ্যের রফতানি বেড়ে ৩৭ দশমিক ২৪ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে; যা জুনের ৩৫ দশমিক ১৪ বিলিয়ন ডলারের কিছু বেশি। একই সময়ে দেশটির আমদানি বেড়ে ৬৪ দশমিক ৫৯ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে; যা তার আগের মাসের ৫৩ দশমিক ৯২ বিলিয়ন ডলারের চেয়ে বেশি।
পাইকারি মূল্য কমেছে ০ দশমিক ৫৮ শতাংশ
গত জুলাইয়ে ভারতে পণ্যের পাইকারি মূল্য আগের বছরের একই সময়ে তুলনায় ০ দশমিক ৫৮ শতাংশ কমেছে। যা জুন মাসের ০ দশমিক ১৩ শতাংশের তুলনায় বেশি।দেশটিতে খাদ্যদ্রব্যের দাম কমে যাওয়ায় পণ্যের পাইকারি মূল্য হ্রাস পেয়েছে বলে বৃহস্পতিবার দেশটির সরকারি পরিসংখ্যানে জানানো হয়েছে।
যদিও ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্সের জরিপে অংশ নেওয়া অর্থনীতিবিদরা জুলাই মাসে ভারতে বার্ষিক পাইকারি মূল্য ০ দশমিক ৩ শতাংশ হ্রাস পেতে পারে বলে ধারণা করেছিলেন।
• জুলাইয়ে খাদ্যের পাইকারি দাম গত বছরের তুলনায় ২ দশমিক ১৫ শতাংশ কমেছে। যদিও জুনে তা ছিল ০ দশমিক ২৬ শতাংশ।
• দেশটিতে জুলাই মাসে সবজির দাম গত বছরের তুলনায় ২৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ কমেছে; জুনে যা ছিল ২২ দশমিক ৬৫ শতাংশ।
• উৎপাদিত পণ্যের দাম গত বছরের তুলনায় ২ দশমিক ০৫ শতাংশ বেড়েছে; জুনে যা ছিল ১ দশমিক ৯৭ শতাংশ।
• জ্বালানি ও বিদ্যুতের দাম গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২ দশমিক ৪৩ শতাংশ কমেছে, যেখানে জুন মাসে এই দাম ২ দশমিক ৬৫ শতাংশ কমেছিল। সূত্র: রয়টার্স
বিডি প্রতিদিন/একেএ