ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব আহমেদ ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পাচার করা টাকায় যুক্তরাষ্ট্রে তার দুটি বাড়ি থাকার তথ্য পেয়েছে সংস্থাটি।
গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদক প্রধান কার্যালয়ে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান সংস্থাটির মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন। জয়ের বিরুদ্ধে করা মামলাটির বাদী দুদকের সহকারী পরিচালক এ কে এম মর্তুজা আলী সাগর। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি-বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে ৬০ কোটি ১৪ লাখ ৭৩ হাজার টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
আক্তার হোসেন জানান, ২০০০ সাল থেকে চলতি বছরের মধ্যে দুদকের অনুসন্ধানে সজীব আহমেদ ওয়াজেদ জয়ের নামে সর্বমোট ৫৪ কোটি ৩৯ লাখ ২০ হাজার ৯৭৮ টাকা মূল্যের স্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া গেছে। তার নামে এফডিআর, আসবাবপত্র এবং হাতে নগদ ও ব্যাংক স্থিতিসহ মোট ৬ কোটি ৭৮ লাখ ৮৪ হাজার ৮৯১ টাকা মূল্যের অস্থাবর সম্পদ অর্জনেরও তথ্য রয়েছে। সজীব ওয়াজেদ জয়ের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ৬১ কোটি ১৮ লাখ ৫ হাজার ৮৬৯ টাকা। অনুসন্ধানের সময় পাওয়া রেকর্ডপত্র ও তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়- তার সর্বমোট ব্যয়ের পরিমাণ ২৮ লাখ ৭৬ হাজার ৬৪৩ টাকা। এসব সম্পদ অর্জনের বিপরীতে সজীব ওয়াজেদ জয়ের গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায় ১ কোটি ৩২ লাখ ৮ হাজার ৫৪২ টাকা। এ গ্রহণযোগ্য আয় বাদ দিলে তার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ৬০ কোটি ১৪ লাখ ৭৩ হাজার ৯৭০ টাকা। তিনি জানান, সজীব ওয়াজেদ জয় সাবেক প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি-বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে পাবলিক সার্ভেন্ট হিসেবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অসৎ উদ্দেশ্যে অসাধু উপায়ে অর্জিত জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে সংগতিবিহীন ৬০ কোটি ১৪ লাখ ৭৩ হাজার ৯৭০ টাকার সম্পদ অর্জন করেন। হুন্ডি কিংবা অন্য মাধ্যমে অর্থ পাচার করে যুক্তরাষ্ট্রে দুটি বাড়ি কেনেন। যার মূল্য ৫৪ কোটি ৪ লাখ ৩২ হাজার ২৫৮ টাকা। এ টাকা বাংলাদেশের আয়কর নথিতে না দেখিয়ে দেশ থেকে বিদেশে পাচার করেন তিনি। এ ছাড়াও তিনি নিজ নামের দুটি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ৫৭ কোটি ৫০ লাখ ৫৪ হাজার ৩১৫ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।