তৈরি পোশাকশিল্পে কর্মরত নারী শ্রমিকরা ঘর ও কর্মস্থল দুই জায়গায় সহিংসতার শিকার হচ্ছেন। গত এক বছরে নারী শ্রমিকদের বিরুদ্ধে তাদের স্বামীর সহিংসতার হার ছিল অনেক বেশি। যৌন সহিংসতা ছাড়া অন্য সব ধরনের সহিংসতা গত দুই বছরে আরও বেড়েছে। কর্মক্ষেত্রে মানসিক সহিংসতার হারও তাদের মধ্যে অনেক বেশি ছিল।
গতকাল আইসিডিডিআরবি ঢাকার মহাখালী ক্যাম্পাসের সাসাকাওয়া মিলনায়তনে ‘তৈরি পোশাকশিল্পে (গার্মেন্টে)’ কর্মরত নারী শ্রমিকদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকার নিয়ে কোহর্ট গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করা হয়। গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডার সহায়তায় আইসিডিডিআরবি ২৪ মাসব্যাপী এ গবেষণা পরিচালনা করে। গবেষণা উপস্থাপনে আয়োজিত সেমিনারে আলোচক ছিলেন পপুলেশন কাউন্সিল বাংলাদেশের সাবেক পরিচালক ড. উবাইদুর রব, বিকেএমইএর যুগ্ম সম্পাদক ফারজানা শারমিন এবং মেরী স্টোপস বাংলাদেশের সাবেক নির্বাহী পরিচালক ইয়াসমিন এইচ আহমেদ। গবেষণাটির প্রধান গবেষক ছিলেন আইসিডিডিআরবির ইমিরেটাস সায়েন্টিস্ট ড. রুচিরা তাবাসসুম নভেদ।
গবেষণার ফলাফল উপস্থাপনে বলা হয়, গবেষণার শুরুতে প্রায় ৪৮ শতাংশ নারী গার্মেন্টশ্রমিক কর্মক্ষেত্রে মানসিক সহিংসতার শিকার হয়েছিলেন, যা দুই বছর পর বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৫ শতাংশে। উদ্বেগজনক বিষয় হলো, সহিংসতার শিকার নারীরা প্রায় কেউই আনুষ্ঠানিক সাহায্য চাইতে যান না। শুরুতে ৩৫ শতাংশ নারী অনানুষ্ঠানিক (পরিবার বা বন্ধুদের কাছে) সাহায্য চেয়েছিলেন, কিন্তু এ হার ক্রমশ কমে ২ বছর শেষে দাঁড়ায় মাত্র ২১ শতাংশে। কর্মক্ষেত্রে সহিংসতার ঘটনায়ও মাত্র প্রতি পাঁচজন নারীর মধ্যে একজন নারী শুরুতে কর্তৃপক্ষকে সহিংসতার কথা জানিয়েছিলেন এবং ২ বছর পরে এসেও এ চিত্রে কোনো পরিবর্তন হয়নি।
পোশাক কারখানাগুলোয় যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য নিয়ে কিছু পরামর্শমূলক সেবা থাকলেও দরকারি সরবরাহ সীমিত। জরিপে অংশ নেওয়া শ্রমিকরা যেসব কারখানায় কাজ করেন, সেগুলোর মধ্যে শুধু ২২ শতাংশ কারখানায় স্যানিটারি প্যাড পাওয়া যায় এবং মাত্র ১৪ শতাংশ কারখানায় পরিবার পরিকল্পনাসামগ্রী সরবরাহের তথ্য মিলেছে।