বিশ্বে অনলাইনের স্বাধীনতা কমে গেলেও, বাংলাদেশে এর উন্নতি হয়েছে। ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ফ্রিডম হাউসের প্রকাশিত ‘ফ্রিডম অন দ্য নেট ২০২৫’ প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশের স্কোর ১০০-এর মধ্যে ৪৫, যা গত বছর ছিল ৪০।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির করা এই জরিপ প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে বিশ্বের ৭২টি দেশের ইন্টারনেট স্বাধীনতার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।এতে ২৭টি দেশের পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে, আর ১৭টি দেশ সামগ্রিকভাবে ভালো করেছে। ২০২৪ সালের জুন থেকে চলতি বছরের মে পর্যন্ত তথ্য বিবেচনা করেছে ফ্রিডম হাউস।
গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি বলছে, বাংলাদেশে ২০২৪ সালের আগস্টে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে হওয়া অভ্যুত্থানে একটি কর্তৃত্ববাদী সরকার ক্ষমতা হারায়। এরপর অন্তর্বর্তী সরকার ডিজিটাল ক্ষেত্রে কিছু ইতিবাচক সংস্কার আনে। ফলে বাংলাদেশের ইন্টারনেট স্বাধীনতা সূচক ৫ পয়েন্ট বেড়ে ১০০-এর মধ্যে ৪৫ হয়েছে। গত বছর এই স্কোর ছিল ৪০।
এটি গত সাত বছরের সেরা অবস্থান। তবে এত উন্নতির পরও বাংলাদেশ এখনও ‘আংশিক মুক্ত’ দেশ হিসেবে তালিকায় রয়ে গেছে। এই তালিকায় বাংলাদেশ ২০১৩ সাল থেকে অবস্থান করছে।
ফ্রিডম হাউস তিনটি বড় বিষয় দেখে স্কোর নির্ধারণ করে। এগুলো হলো– ইন্টারনেটে প্রবেশের বাধা, অনলাইনে প্রকাশিত বিষয়বস্তুর ওপর নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবহারকারীর অধিকার লঙ্ঘন। এই তিনটি বিভাগে মোট ২১টি সূচক ব্যবহার করে প্রতিটি দেশের অনলাইন স্বাধীনতার মাত্রা নির্ধারণ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ইন্টারনেট বন্ধ না করার নীতি গ্রহণ করে এবং ইন্টারনেট প্রবেশাধিকারকে মানবাধিকার হিসেবে দেখার কথা বলে। ২০২৫ সালের মে মাসে সরকার বিতর্কিত সাইবার নিরাপত্তা আইন (সিএসএ) বাতিল করে। এর বদলে সাইবার নিরাপত্তা অধ্যাদেশ (সিএসও) জারি হয়। এতে অনলাইনে হয়রানি ও যৌন নির্যাতনবিরোধী সুরক্ষা রয়েছে। তবে আগের মতোই কিছু উদ্বেগজনক বিষয়– যেমন অনলাইনে বক্তব্যের জন্য শাস্তি ও নজরদারি রয়ে গেছে।
ফ্রিডম হাউসের প্রতিবেদন অনুযায়ী এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে ইন্দোনেশিয়া (৪৮), ভারত (৫১) ও শ্রীলঙ্কা (৫৩)। গবেষণায় ২০২৪ সালের জুন থেকে ২০২৫ সালের মে পর্যন্ত পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/কামাল