মার্কিন বাজারে বাংলাদেশের তৈরি ট্রাভেল পণ্যের রপ্তানি দ্রুত বাড়ছে। চীনে উচ্চ শুল্ক ও উৎপাদন ব্যয়ের চাপ এড়াতে মার্কিন ক্রেতারা ক্রমশ বাংলাদেশকে বেছে নিচ্ছেন। এরই মধ্যে লাগেজ, হ্যান্ডব্যাগ, স্পোর্টস ব্যাগ ও পার্সসহ বিভিন্ন ভ্রমণ পণ্যের রপ্তানি আয়ে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। মার্কিন বাণিজ্য দপ্তরের টেক্সটাইল ও অ্যাপারেল কার্যালয় প্রকাশিত সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সময়ে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাভেল পণ্যের রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ৬০ কোটি ৯৯ লাখ ডলার। যা গত বছরের একই সময়ে (৪৯ কোটি ৪৪ লাখ ডলার) তুলনায় ২৩ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি। রপ্তানিতে সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে ব্যাকপ্যাকে। এ খাতের রপ্তানি আয় গত বছরের তুলনায় ৭৩ দশমিক ৯১ শতাংশ বেড়ে ৬৯ লাখ ৮০ হাজার ডলারে দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশ ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে এসব পণ্য রপ্তানি করে আয় করেছিল ৯০ কোটি ৫৯ লাখ ডলার, যা ২০২০ সালের (৪৩ কোটি ৪৭ লাখ ডলার) তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি। রপ্তানিকারকরা বলছেন, চীনে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত ৩০ শতাংশের বেশি শুল্কের কারণে ক্রেতারা বিকল্প বাজার খুঁজছেন। আর বাংলাদেশ তুলনামূলক কম খরচ ও প্রায় ২০ শতাংশ শুল্ক সুবিধা পাওয়ায় দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, প্রথম দিকে আমরা চীনা ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে অর্ডার পেতাম। তবে এখন সরাসরি মার্কিন ক্রেতারা অর্ডার দিচ্ছেন। এতে স্থানীয় রপ্তানিকারকদের সক্ষমতা বাড়ছে। তিনি আরও জানান, চীন, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়া এখনো বৈশ্বিক বাজারে শীর্ষে থাকলেও বাংলাদেশও ধীরে ধীরে শক্ত অবস্থান তৈরি করছে। তবে শিল্প-সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, কাঠামোগত সীমাবদ্ধতার কারণে বাংলাদেশ এখনো পুরো সম্ভাবনা কাজে লাগাতে পারছে না। এর মধ্যে রয়েছে দীর্ঘ শিপমেন্ট সময় ও আমদানিনির্ভর কাঁচামালের ব্যবহার। কাঁচামালের বড় অংশ চীন থেকেই আমদানি করতে হয়, যা খরচ ও উৎপাদন সময় বাড়িয়ে প্রতিযোগিতা কমাচ্ছে। মার্কিন তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের প্রথম সাত মাসে চীন থেকে ট্রাভেল পণ্যের আমদানি ২১ শতাংশের বেশি কমে দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলারে। অন্যদিকে ভিয়েতনাম থেকে আমদানি বেড়েছে ২২ দশমিক ৭ শতাংশ, কম্বোডিয়া থেকে ১৮ দশমিক ১৯ শতাংশ এবং ভারত থেকে ১২ দশমিক ৫৪ শতাংশ।