ঢাকায় রাশিয়ার এসবার ব্যাংকের লিয়াজোঁ অফিস খুলতে চায় মস্কো। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সরঞ্জাম সরবরাহ সংক্রান্ত কোটি কোটি ডলারের বকেয়া অর্থপ্রদানের জট নিরসনে এই প্রস্তাব দিয়েছে মস্কো। সম্প্রতি মস্কোতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে রুশ উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিকহাইল গালুজিন ও আন্দ্রে রুদেনকা র উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এ প্রস্তাব তোলা হয় বলে সূত্র জানায়। সূত্রগুলো জানিয়েছে, রুশ পক্ষ স্পষ্টভাবে বলেছে বাংলাদেশে এসবার ব্যাংকের অফিস চালু করা হলে রূপপুর প্রকল্পসহ অন্যান্য কৌশলগত সহযোগিতার আওতায় থাকা প্রকল্পগুলোর বকেয়া অর্থ দ্রুত পরিশোধের সুযোগ তৈরি হবে। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংককে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তাবটি যাচাই-বাছাই করে দেখার এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থার সঙ্গে পরামর্শ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, এ প্রস্তাব দেশের জন্য একটি জটিল আর্থিক ও ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি করেছে। কারণ এসবার ব্যাংক বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের কঠোর নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে।
তিনি বলেন, এসবার ব্যাংককে অফিস স্থাপনের অনুমতি দিলে একদিকে রাশিয়ার সঙ্গে বকেয়া অর্থ নিষ্পত্তির পথ সুগম হবে, তবে অন্যদিকে বাংলাদেশের ওপর দ্বিতীয় পর্যায়ের নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। বিষয়টি তাই গভীরভাবে পর্যালোচনা করা প্রয়োজন। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চিঠি পেয়েছি। বিষয়টি বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ একসঙ্গে পর্যালোচনা করছে। সিদ্ধান্ত নিতে কিছুটা সময় লাগবে, কারণ এখানে ভূ-রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দুই দিকই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাশিয়া তাদের প্রস্তাবে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে থেকে একটি নির্ভরযোগ্য আর্থিক চ্যানেল তৈরি করাই এখন জরুরি। কারণ নিষেধাজ্ঞার কারণে রুশ ব্যাংকগুলো আন্তর্জাতিক পেমেন্ট সিস্টেম সুইফট থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন।