বেলারুশ সীমান্ত থেকে আসা চোরাচালানের বেলুন গুলি করে নামানোর নির্দেশ দিয়েছে লিথুয়ানিয়া সরকার। দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইনগা রুগিনিয়েনে এই ঘটনাকে ‘হাইব্রিড আক্রমণ’ বলে উল্লেখ করেছেন।
গত সপ্তাহে রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র বেলারুশ থেকে উড়ে আসা বেলুনে চোরাই সিগারেট বহন করা হচ্ছিল। এসব বেলুন সীমান্ত অতিক্রম করে লিথুয়ানিয়ার রাজধানী ভিলনিয়াসের আকাশে প্রবেশ করায় চারবার বিমানবন্দর বন্ধ রাখতে হয়। ফলে একাধিক ফ্লাইট বাতিল ও স্থগিত হয় এবং সীমান্তের কয়েকটি পয়েন্ট অস্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী রুগিনিয়েনে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আমরা সবচেয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, অন্য কোনো বিকল্প নেই। তিনি জানান, সরকার ন্যাটো চুক্তির ৪নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নিরাপত্তা আলোচনাও আহ্বান করতে পারে।
লিথুয়ানিয়া বলেছে, এসব বেলুন বেলারুশের চোরাকারবারিরা পাঠালেও বেলারুশের স্বৈরশাসক প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কো দায় এড়াতে পারেন না। তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং এসব কর্মকাণ্ড বন্ধে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না।
সম্প্রতি একাধিক ঘটনার পর বেলারুশ সীমান্তের সব পথ বন্ধ করে দিয়েছে লিথুয়ানিয়া। কেবল কূটনীতিক ও প্রতিবেশী দেশ থেকে ইইউ নাগরিকদের যাতায়াতের সুযোগ রাখা রয়েছে।
শুক্রবার ও শনিবার রাতে ভিলনিয়াস বিমানবন্দরে আবারও একই ধরনের ঘটনার ফলে কয়েক ডজন ফ্লাইট বাতিল হয়। এর আগে বুধবার ভোরেও অনুরূপ ঘটনার কারণে মেডিনিনকাই ও শালচিনিনকাই সীমান্ত চৌকি কয়েক ঘণ্টার জন্য বন্ধ ছিল।
লিথুয়ানিয়া প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত সপ্তাহে রাশিয়ার কালিনিনগ্রাদ অঞ্চল থেকে দুটি যুদ্ধবিমান লিথুয়ানিয়ার আকাশসীমায় প্রায় ৭০০ মিটার ভেতরে প্রবেশ করে ১৮ সেকেন্ড পর ফিরে যায়। দেশটি এ ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে রাশিয়ার দূতাবাস কর্মকর্তাকে তলব করে।
রাশিয়া অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, বিমানগুলো নিজেদের সীমার মধ্যেই উড়েছিল, অন্য দেশের আকাশসীমা লঙ্ঘন করা হয়নি।
লিথুয়ানিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী কেস্টুতিস বুদ্রিস বলেছেন, এসব ঘটনা একক কোনো দুর্ঘটনা নয়, বরং এটি একটি পরিকল্পিত উসকানি—ন্যাটোর মনোবল পরীক্ষা করা ও ইউরোপের স্থিতি নষ্ট করার প্রচেষ্টা।
বাল্টিক অঞ্চলের তিন দেশ—লিথুয়ানিয়া, লাটভিয়া ও এস্তোনিয়া—যারা সবাই ন্যাটোর সদস্য এবং ইউক্রেনের দৃঢ় সমর্থক। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দেশগুলো রাশিয়ার বিমান ও ড্রোন অনুপ্রবেশের মুখে পড়েছে। এর ফলে ইউরোপের আকাশপথ, বিশেষ করে কোপেনহেগেন ও মিউনিখের মতো শহরের বিমানবন্দরগুলোতেও বারবার ফ্লাইট ব্যাহত হচ্ছে। লিথুয়ানিয়া বলছে, এই পরিস্থিতি ইউরোপের নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি এবং একে অবমূল্যায়ন করা যাবে না।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল