সীমান্তে উত্তেজনা ও সংঘর্ষের মধ্যে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে শান্তি আলোচনা সোমবার তৃতীয় দিনে গড়িয়েছে। তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে দুই দেশের প্রতিনিধিরা যুদ্ধবিরতি বজায় রাখা এবং দীর্ঘমেয়াদি সমঝোতার বিষয়ে আলোচনা করছেন।
আলোচনার সূত্রপাত হয় কাতারের মধ্যস্থতায়। গত ১৯ অক্টোবর দোহায় পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ ও আফগান প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোল্লা মোহাম্মদ ইয়াকুব যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এর পর থেকেই ইস্তাম্বুলে চলছে বিস্তারিত আলোচনার পরবর্তী ধাপ।
আফগান তালেবান সরকারের মুখপাত্র জবিউল্লাহ মুজাহিদ জানিয়েছেন, আলোচনায় এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। পাকিস্তানের কর্মকর্তারাও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তুরস্ক সরকারের তত্ত্বাবধানে আলোচনাটি ‘গঠনমূলক ও ফলপ্রসূ’ রাখার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সূত্র।
পাকিস্তান সেনাবাহিনী জানিয়েছে, আলোচনার মধ্যেও সীমান্ত এলাকায় সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে। রবিবার দুই দফা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে গিয়ে তারা ২৫ জন জঙ্গিকে হত্যা করেছে। এসময় পাকিস্তানের পাঁচ সেনা নিহত হয়েছেন। সংঘাতপূর্ণ এলাকাগুলো গণমাধ্যমের জন্য নিষিদ্ধ হওয়ায় এই তথ্য যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আসিয়ান সম্মেলনের এক পার্শ্ব বৈঠকে বলেন, পাকিস্তান-আফগানিস্তান সংকট দ্রুত সমাধানের জন্য তিনি উদ্যোগ নেবেন। এর আগে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা প্রশমনে ভূমিকার জন্য পাকিস্তান ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য প্রস্তাব করেছিল।
পাকিস্তানি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আলোচনায় ইসলামাবাদ স্পষ্ট করে জানিয়েছে— ‘সন্ত্রাসীদের আশ্রয় কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’ তারা আফগান পক্ষকে নিষিদ্ধ সংগঠন তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)-এর বিরুদ্ধে দৃশ্যমান ও যাচাইযোগ্য পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছে।
এদিকে, দুই দেশের সীমান্ত বাণিজ্য পুরোপুরি বন্ধ থাকায় শত শত পণ্যবাহী ট্রাক আটকা পড়েছে। বাণিজ্যিক রুট খুলে দেওয়ার আশায় ব্যবসায়ীরা দ্রুত আলোচনার ইতিবাচক ফলাফলের অপেক্ষায় রয়েছেন।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল