আনোয়ারা ও কর্ণফুলী নিয়ে গঠিত চট্টগ্রাম-১৩ নির্বাচনি আসনটি ছিল বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। তবে ২০০৮ সালের নির্বাচনে আসনটি হাতছাড়া হওয়ার পর এবার সেটি পুনরুদ্ধার করতে চায় বিএনপি। এজন্য দলটির অর্ধ ডজনেরও বেশি নেতা নির্বাচনে প্রার্থী হতে চাইছেন।
আসন্ন নির্বাচনে এ আসন থেকে মনোনয়ন পাওয়ার জন্য দৃশ্যমানভাবে জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন সাবেক এমপি ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য সরওয়ার জামাল নিজাম, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্যসচিব লায়ন হেলাল উদ্দিন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রাথমিক মনোনয়নপ্রাপ্ত মোস্তাফিজুর রহমান। এ ছাড়াও মনোনয়ন চাইছেন জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক আলী আব্বাস, জেলা যুবদল সভাপতি মো. শাহজাহান, জেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াছ কাঞ্চনসহ কয়েকজন। নির্বাচন ঘিরে এ আসনে বিএনপির একাধিক নেতা সক্রিয় থাকলেও একক প্রার্থী দিয়েছে জামায়াত ও এনসিপি। এ ছাড়া অন্য কোনো দলের তৎপরতা এখন পর্যন্ত নেই। আসনটিতে জামায়াতে ইসলামী থেকে প্রার্থী হয়েছেন দক্ষিণ জেলা জামায়াতের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক মাহমুদুল হাসান চৌধুরী। পাশাপাশি জুলাই গণ অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণ নেতা জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় সদস্য জুবাইরুল আলম মানিকও নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন। এর বাইরে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে গণঅধিকার পরিষদের আনোয়ারা উপজেলার সভাপতি মুহাম্মদ মুজিবুর রহমান ও ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী হিসেবে মাওলানা এরফানুল হক হালিমের নাম শোনা যাচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রমতে, চট্টগ্রাম-১৩ আসনটি এ অঞ্চলের সম্ভাবনাময় শিল্প এলাকা হিসেবে পরিচিত। এখানে রয়েছে কোরিয়ান ইপিজেড, রাষ্ট্রীয় সার কারখানা সিইউএফএল, কাফকো ও চায়না ইকোনমিক জোন। ফলে আসনটির গুরুত্ব অন্য আসনের তুলনায় বেশি। আসনটি বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত হলেও ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জয়লাভ করেন। পরের তিনটি নির্বাচনেও এমপি হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী। মনোনয়ন প্রশ্নে বিএনপির স্থানীয় নেতা-কর্মীরা জানান, আন্দোলন সংগ্রামের সক্রিয় থাকা দলের ক্লিন ইমেজের নেতার হাতেই উঠুক ধানের শীষের মনোনয়ন। তবে দল যাকেই মনোনয়ন দেবে তাকে বিজয়ী করতেই মাঠে থাকবে বিএনপি।
জেলা বিএনপির সদস্যসচিব লায়ন হেলাল উদ্দিন বলেন, বিগত আন্দোলন সংগ্রামে দলের জন্য সর্বোচ্চ সামর্থ্য দিয়ে কাজ করেছি। দলের কর্মসূচি, নেতা-কর্মীদের জামিনের ব্যবস্থা, পরিবারকে সহায়তা করা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছি। সুতরাং দল মনোনয়ন দিলে বিজয়ের ব্যাপারে আমি আশাবাদী।
বিএনপির অপর মনোনয়নপ্রত্যাশী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ওয়ান-ইলেভেনের পর থেকে দলের জন্য কাজ করছি।
আন্দোলন সংগ্রামে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাঠে থেকেছি।
যার ফলশ্রুতিতেই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দল প্রাথমিকভাবে আমাকে মনোনয়ন দিয়েছিল। এবারও আমাকে মনোনয়ন দিলে আসনটি পুনরুদ্ধার করে দলকে উপহার দিতে পারব।