পুষ্টিতে ভরপুর, রঙিন ও উপকারী এমনই এক সবজি হলো বিট। সুস্বাদু এই সবজিটি শুধু খাবারের স্বাদ-রঙ বাড়ায় না, বরং শরীরের জন্য উপকার করে বহু দিক থেকে। বিশেষ করে হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য রক্ষায় এর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, নিয়মিত বিট খাওয়ার অভ্যাস হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং শরীরের সামগ্রিক শক্তি ও প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
বিটে প্রাকৃতিকভাবে থাকে নাইট্রেটস, যা শরীরে গিয়ে নাইট্রিক অক্সাইডে পরিণত হয়। এই উপাদান রক্তনালিকে প্রসারিত করে, ফলে রক্তসঞ্চালন উন্নত হয় এবং রক্তচাপ কমে। উচ্চ রক্তচাপে ভোগা ব্যক্তিদের জন্য বিট হতে পারে একটি কার্যকরী ও প্রাকৃতিক সমাধান।
এছাড়া বিটে থাকা ফোলিক অ্যাসিড ও পটাশিয়াম সরাসরি হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতা উন্নত করে। ফোলিক অ্যাসিড ধমনীর প্রদাহ কমায় এবং পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
বিটে থাকা কার্বোহাইড্রেটস এটিকে এক চমৎকার শক্তির উৎসে পরিণত করে। বিশেষ করে ক্রীড়াবিদ, দৌড়বিদ বা যেকোনো ধরনের শারীরিক পরিশ্রম করা ব্যক্তিদের জন্য এটি অত্যন্ত উপকারী। নিয়মিত একটি করে বিট খেলে শারীরিক সহনশীলতা ও এনার্জি লেভেল চোখে পড়ার মতো বাড়ে।
বিটের আরেকটি বড় গুণ হলো এর উচ্চ ফাইবার উপাদান। এটি হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে, অন্ত্রের মুভমেন্ট বাড়ায় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি দেয়। যাদের হজমজনিত সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য বিট কার্যকর একটি সমাধান হতে পারে।
বিটে থাকা ভিটামিন সি ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বিটালেইন ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটি কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায়, ত্বককে করে উজ্জ্বল, টানটান ও তারুণ্যদীপ্ত। নিয়মিত বিট খেলে ত্বকে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা ফিরে আসে এবং বলিরেখা কমে যায়।
বিটের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান শরীরের প্রদাহ হ্রাস করে এবং ফ্রি র্যাডিক্যালস থেকে সুরক্ষা দেয়। এতে করে হৃদরোগ, ডায়াবেটিসের মতো জটিল রোগের ঝুঁকি কমে। পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, ক্লান্তি দূর হয় এবং মানসিক শক্তিও বাড়ে।
বিট সহজেই সালাদ, জুস বা তরকারির সঙ্গে যুক্ত করা যায়। কাঁচা, সিদ্ধ কিংবা রান্না করে—যেকোনোভাবে খাওয়া যায় এটি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিদিন একটিমাত্র বিট খাওয়ার অভ্যাস দীর্ঘমেয়াদে শরীর ও হৃদয়ের জন্য আশীর্বাদ হয়ে উঠতে পারে।
বিডি প্রতিদিন/মুসা