দীর্ঘদিন ধরে সাসটেইনেবল ডেভলপমেন্ট গোল (এসডিজি) নিয়ে কাজ করার স্বীকৃতি স্বরূপ জাতিসংঘের ইয়্যুথ চ্যাঞ্জমেকার হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) সমাজকর্ম বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. মোফাজ্জল হক।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকালে জাতিসংঘের এসডিজি ফান্ড ওয়েবসাইটে ‘ফ্রম ক্লাসরুম টু কমিউনিটি: ব্রিজিং দ্যা গ্যাপ থ্রো কোয়ালিটি লার্নিং’ শিরোনামে মোফাজ্জলের বিভিন্ন প্রজেক্টের কাজের স্বীকৃতি দিয়ে পাবলিকেশন করেন সংস্থাটি।
জানা যায়, জাতিসংঘের এসডিজি ৪ ও ৫ (শিক্ষার গুণগত মান ও লিঙ্গ সমতা) নিয়ে কাজ করার জন্য এ স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এসব প্রজেক্টের অধীনে সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার হাওরাঞ্চলের তিনটি গ্রামের তিনটি প্রতিষ্ঠানে এবং সিলেটের একটি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার গুণগত মান ও লিঙ্গ সমতা বাস্তবায়নে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন মোফাজ্জল।
এর আগে চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব ইয়্যুথ এর ১১তম আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রজেক্ট সাবমিশন বাছাই প্রক্রিয়ায় সারা বিশ্বের অসংখ্য প্রজেক্টের মধ্যে সেরা দশে জায়গা করে নিয়েছে এই শিক্ষার্থীর প্রজেক্ট।
এছাড়াও তিনি ২০২৩ সালে জাতিসংঘের মিলেনিয়াম ফেলোশিপের জন্য মনোনীত হয়ে ‘লেটস এডুকেশন বি ফর অল’ প্রজেক্টের অধীনে সফলভাবে প্রজেক্ট সম্পন্ন করেন। এবং গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর ৭০টি দেশের ৪শ’ ৭০জন অংশগ্রহণকারী প্রজেক্টের মধ্যে থেকে মালয়েশিয়ার অ্যাওয়ারনেস-৩৬০ ফেলোশিপ প্রোগ্রামের জন্য মনোনীত হয়ে প্রজেক্ট বাস্তবায়নে কাজ করেছেন। বর্তমানে ফিনল্যান্ডের ইউনাইটেড পিপলস গ্লোবাল (ইউপিজি)-এর অধীনে কমিউনিটি ক্যাপ্টেন হিসেবে কাজ করছেন। এমনকি মিলেনিয়াম ফেলোশিপের অধীনে গ্লোবাল অ্যাডমিশন কমিটিতে মনোনীত হয়ে পাকিস্তানের মেহরান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও ভারতের ইউনিভার্সিটি অফ ইন্ডিয়া'র অ্যাপ্লিকেশন রিভিউ করেছেন বলেও জানান মোফাজ্জল।
সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী মো. মোফাজ্জল হক বলেন, ‘জাতিসংঘের ইয়্যুথ চ্যাঞ্জমেকার স্বীকৃতি আমার কাজের অনুপ্রেরণা যোগাবে। যেহেতু আমার শিক্ষার ফিল্ড সমাজকর্ম বিষয়ক তাই আমি কমিউনিটি এবং সমাজের জন্য সামান্য হলেও অবদান রাখতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটা দেশ দীর্ঘমেয়াদি টেকসই উন্নয়নের জন্য শুধু অবকাঠামোগত উন্নয়ন করলেই হবে না। দেশের সমৃদ্ধি অর্জনের জন্য প্রয়োজন দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়ন। সে জন্য পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সমাজের মূল ধারায় নিয়ে আসা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। সেই জায়গা থেকেই আমি কাজ করছি।’
জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে সবার সম্মিলিত অংশগ্রহণ প্রয়োজন বলেও মনে করেন তিনি।
এ বিষয়ে সমাজকর্ম বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মুহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ‘এসডিজি বাস্তবায়নে বিশ্বব্যাপী তরুণদের আগ্রহী করতে জাতিসংঘ স্বীকৃতি দিয়ে থাকে। এটি অ্যাকাডেমিক এবং প্রফেশনাল জীবনে খুবই গুরুত্ব বহন করে। সে (মোফাজ্জল) প্রথম বর্ষ থেকেই ন্যাশনাল, ইন্টারন্যাশনাল বিভিন্ন সংগঠনের সাথে কাজ করছে। এটি আমাদের বিভাগের অন্য শিক্ষার্থীদের জন্যও অনুপ্রেরণার।’
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ