মাঝি-মাল্লাদের 'মারো টান হেইয়ো, জিতেই যাব হেইয়ো'-এসব আওয়াজ আর সহস্রাধিক দর্শকের আনন্দ উচ্ছাসের মধ্যদিয়ে বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় হয়ে গেল গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী তিনদিন ব্যাপি নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা।
উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী বাঙালি নদীতে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। গত বুধবার থেকে শুরু হওয়া এই নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা আজ শুক্রবার শেষ হয়। খানপুর দক্ষিণপাড়া যুব সমাজ ঈদ পরবর্তী ব্যতিক্রমী উৎসব নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে।
শুক্রবার চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা নৌকা বাইচ দেখতে দুপুরের পর থেকেই বাঙালি নদীর পাদদেশে শিশু-কিশোর-কিশোরীসহ বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ জমায়েত হতে থাকেন। প্রতিযোগিতা শুরুর আগ মুহূর্তে নদীর দু’পাড়ে ঢল নামে হাজারো মানুষের। প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া নৌকার খেলোয়াড়রা কখনো একদল আরেক দলকে পেছনে ফেলে আগে ওঠে। আবার পেছনে পড়ে। এসময় নদীর দু’পাড়ে দাঁড়ানো হাজারো দর্শকস্রোতা তীব্র করতালির মাধ্যমে তাদেরকে উৎসাহ যোগিয়ে যান।
প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপি চলে গ্রাম বাঙলার ঐতিহ্যবাহী এই চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা। পরে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক রফিকুল ইসলাম রফিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। খানপুর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান খলিলের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন অত্র ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আব্দুস সামাদ। এছাড়া একই ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার মহির উদ্দিন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
খানপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আব্দুস সামাদ বলেন, এক সময় গ্রাম বাংলার অন্যতম উৎসব ছিল নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা। কালের আবর্তে তা হারিয়ে যেতে বসেছে। গ্রামীণ ঐতিহ্য সম্পর্কে বর্তমান প্রজন্ম ভুলে যেতে বসেছে। মূলত আগামি প্রজন্মকে গ্রামীণ ঐতিহ্য সম্পর্কে জানান দিতেই এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে ।
এদিকে নৌকা বাইচ দেখতে আসা শাহীন আলম, সোবাহান মিয়া, আব্দুস সালাম, উম্মে হাবিবা, কোহিনুর খাতুনসহ একাধিক তরুণ-তরুণী জানান, নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা দেখে ভীষণ মজা পেয়েছেন তারা। ঢোলের তালে তালে বৈঠা মারা। হাইও হাইও আওয়াজ করে পানিতে ঝোপাত ঝোপাত শব্ধ তুলে সামনে এগিয়ে যাওয়ার দৃশ্যগুলো ছিল অসাধারণ। এক কথায় নৌকা বাইচ দেখে মুগ্ধ এসব তরুণ-তরুণীরা।
বিডি-প্রতিদিন/ ৩০ জুন, ২০১৭/ আব্দুল্লাহ সিফাত-১৬