বৈরী আবহাওয়ার কারনে কক্সবাজারের টেকনাফ সেন্টমার্টিনে দুইদিন আটকে থাকার পর প্রায় ১ হাজার পর্যটক নিরাপদে টেকনাফে ফিরেছে। বৃহস্পতিবার (৭র্মাচ) পর্যটকবাহী ৪টি জাহাজ বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) অনুমতি নিয়ে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে কেয়ারি সিন্দাবাদ, কেয়ারি ক্রুজ এন্ড ডাইন, দি আটলান্টিক ক্রুজ ও এলসিটি কাজল পর্যটকদের নিয়ে সকালে দ্বীপের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। দ্বীপে যাওয়া এসব জাহাজে করে পর্যটকদের ফিরিয়ে আনা হয়।
দুইদিন আটকে থাকার পর নিরাপদে দ্বীপ ছাড়তে পেরে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন পর্যটকরা। টেকনাফ পৌঁছে ঢাকা আশুলিয়া থেকে আসা পর্যটক দম্পতি জাবেদ ও শবনম ফারিয়া স্বস্তি প্রকাশ করে বলেন, “আবহাওয়া খারাপ হওয়াতে কবে ফিরতে পারব এমন দুশ্চিন্তায় ছিলাম,তবে প্রশাসনকে ধন্যবাদ আটকা পড়া পর্যটকদের ফিরিয়ে আনার জন্য। ”
৩ নং সর্তক সংকেতের কারণে সমুদ্র উত্তাল থাকায় গত বুধবার পর্যটকবাহী কোন জাহাজ সেন্টমার্টিনে যাওয়ার অনুমতি না পাওয়ায় দ্বীপে অবস্থান করা পর্যটকরা দ্বীপে আটকা পড়ে যায়।
জানা যায়, ২য় দিনেও আবহাওয়া অপরিবর্তিত থাকায় টেকনাফ দমদমিয়া জাহাজ ঘাট থেকে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে ৪টি জাহাজ চলাচলের জন্য মৌখিক অনুমতি পায়। স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে পর্যটকবাহী জাহাজ গুলোকে দ্বীপে আটকা পড়া পর্যটকদের ফিরিয়ে আনতে পাঠানো হয়। বজ্রমেঘের ঘনঘটা বৃদ্ধির কারণে সমুদ্র উত্তাল থাকায় আশঙ্কা নিয়ে ৪টি জাহাজ দুপুরে সেন্টমার্টিন দ্বীপে পৌঁছে এবং দ্বীপে আটকা পড়া প্রায় ১ হাজার পর্যটক নিয়ে সন্ধ্যার দিকে নিরাপদে টেকনাফ পৌঁছে।
সেন্টমার্টিন ইউপি চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ জানান, সর্তক সংকেতের কারনে দুইদিন আটকে থাকার পর প্রশাসনের সহযোগিতায় পর্যটকবাহী ৪টি জাহাজে করে প্রায় ১ হাজার পর্যটক দ্বীপ ছেড়েছে। তবে দ্বীপে কতজন আটকা পড়া পর্যটক রয়েছে তা ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সঠিকভাবে গণনা করা হয়। হোটেল পেন্টেসীতে-৪৬জন,সমুদ্র কুঠির-৭৯জন,ব্লুমেরিন-৭০জন,প্রাসাদ-১২০জন,সেন্ড শোর-২৮জন,সী-ষ্টার-৫২জন,সী-প্রবাল-৫০জন,অবকাশ-২০জন,ব্লু-ষ্টার-১৫,সী-পাইন্ট-৫জন,কিং শোর-২জন,বাগান-বাড়ী-৪৫জন,সিটিবি-১৮০জন,লাইট-হাউসে-৯জন,নীল-দিগন্তে-২২জন,কোরাল ভিউ-২জন,ড্রিম লাইটে-২২জন সর্বমোট ৮ শতাধিকেরও বেশি পর্যটক দ্বীপ ছেড়ে গেছে।
পর্যটকবাহী জাহাজ দি আটলান্টিক ক্রুজের টেকনাফের ব্যবস্থাপক আব্দুল আজিজ বলেন, টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে জাহাজ চলাচলের অনুমতি পাওয়া যায়। ফলে আজ সকালে জাহাজে পর্যটক বহন করে দ্বীপে উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছি। তবে দ্বীপে ভ্রমণে এসে আটকা পড়া পর্যটকদের নিয়ে নিরাপদে টেকনাফে ফিরে এসেছি।
বাংলাদেশ অভ্যনন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) টেকনাফ অঞ্চলের পরিদর্শক (পরিবহন) মোহাম্মদ হোসেন বলেন, বজ্রমেঘের ঘনঘটা বৃদ্ধির কারণে সমুদ্র উত্তাল রয়েছে। আজ আবহাওয়া স্বাভাবিক থাকার ফলে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে এ রুটে পাচঁটি জাহাজ চলাচল করছে। দ্বীপে ভ্রমনে এসে আটকা পড়া পর্যটকদের নিয়ে জাহাজ গুলো সন্ধ্যায় নিরাপদে ফিরে এসেছে।
এ ব্যাপারে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রবিউল হাসান বলেন,বৈরী আবহাওয়া কেটে যাওয়ায় সেন্টমার্টিনে পর্যটকবাহি জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে জাহাজ গুলো সন্ধ্যার দিকে পর্যটকদের নিয়ে নিরাপদে টেকনাফে ফিরে এসেছে। উল্লেখ্য, দ্বীপে ভ্রমণে গিয়ে ৩ নং সর্তক সংকেতের কারনে আটকা পড়া পর্যটকদেরকে একদিন পর ফেরত আনার জন্য বৃহস্পতিবার প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে ৪টি জাহাজকে যেতে দেওয়া হয়।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ তাফসীর