"মৌমাছি মৌমাছি
কোথা যাও নাচি নাচি
দাঁড়াওনা একবার ভাই..."
শৈশবে সুরে সুরে ছন্দে ছন্দে এ ছড়াটি পড়েনি এমন মানুষ হযতো খুঁজে পাওয়া যাবে না। তবে মৌমাছি কেবল বইয়ের পাতায়ই রয়েছে, দৃশ্যত এ ক্ষুদ্র প্রাণীটিকে আর দেখা যায় না। মৌচাকে ঢিল ছুঁড়ে দৌড়ে পালিয়ে যাচ্ছে দুষ্ট ছেলের দল- এরকম দৃশ্যও সচরাচর চোখে পড়ে না। ক্রমেই যেন হারিয়ে যাচ্ছে মৌমাছির দল। তাই মৌমাছির ভোঁ-ভোঁ শব্দ শুনতে পাওয়া যায় না।
মৌমাছির প্রজনন বৃদ্ধি ও বসবাসের পরিবেশের অভাবে মুক্ত মৌমাছি ও মৌচাক হারিয়ে যাচ্ছে। তবে মধু সংগ্রহকারীরা বিভিন্ন ফসলের মাঝে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মৌচাষ করছে।
যারা মধু সংগ্রহ করেন তারাই জানান, ১৫/২০ দিন ঘোরাফেরার পরও একটা মৌচাকও খুঁজে পাওয়া যায় না। যদিও বা কোথাও পাওয়া যায় তা আকারে অনেক ছোট। মৌমাছির সংখ্যাও পূর্বের চেয়ে অনেক কম। আগে যেমন মধু পাওয়া যেত এখন সেটা আর নেই।
তবে দিনাজপুরের বিরলের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের ধর্মপুর ইউপির এনায়েতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের পিছনে ৮টি মৌচাক একসাথে সারিবদ্ধভাবে দেখা যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা নাগরিক আতিউর রহমান জানান, প্রতি বছর এখানে ১০/১২টি মৌচাক ধরে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মধু আহরণ করতে না পারলেও প্রতিবেশীরা প্রতিবার বিদ্যালয় ছুটির দিনে মধু সংগ্রহ করে থাকে বলে জানান তিনি। পুরোপুরি হারিয়ে না গেলেও এরকম অনেক প্রত্যন্ত এলাকায় মাঝে মধ্যে দেখা যায়।
কৃষি অফিস জানায়, মৌমাছি বা মৌচাক হারিয়ে যাওয়ার কারণ হলো প্রাকৃতিক দুর্যোগ, তাপমাত্রা বৃদ্ধি, বসবাসের উপযোগী পরিবেশের অভাব, খাদ্যের অভাব, ফসলে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশকের অপপ্রয়োগ, অনাড়ি মধু সংগ্রহকারীদের দিয়ে মৌচাকে অগ্নিসংযোগে মৌমাছি পুড়িয়ে হত্যা করাসহ নানাবিধ কারণে মৌমাছি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। ফলে বিভিন্ন ফসল ও ফলফলাদির পরাগায়নে মারাত্মক বিঘ্নতার সৃষ্টি হচ্ছে।
অথচ ‘মধুর মধ্যে প্রচুর পুষ্টি ও খাদ্য গুণ রয়েছে। দৈহিক গঠন ও সু-স্বাস্থ্য তৈরি ছাড়াও মধু বিভিন্ন রোগের প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি ও কোমলতা বাড়ানোর জন্য মধু বিশেষভাবে উপকারী খাদ্য। মধুর সঙ্গে কালোজিরা মিশিয়ে খেলে স্বাস্থ্য অটুট থাকে।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা