নিজ পিতা ও স্ত্রীর পরিকল্পনায় নির্মমভাবে হত্যার শিকার হয়েছেন হাবিবুল্লাহ (২৫) নামের এক যুবক। ঘটনাটি ঘটেছে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার সংগ্রামপুর ইউনিয়নের মুলবাড়ি গ্রামে। ৫ জানুয়ারি হাবিুল্লাহর স্ত্রী ছবুরা বেগম (২৩) টাঙ্গাইলের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছেন। তিনি শ্বশুরের সাথে তার পরকীয়া সম্পর্ক থাকা এবং তাতে বাধা দেয়ায় স্বামী খুন হওয়ায় কথা স্বীকার করেন।
পুলিশ গত ৬ জানুয়ারি, সোমবার এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে হাবিবুল্লাহর পিতা আবু জাফর স্বপনকে (৫২) গ্রেফতার করে। আবু জাফর নিজেই বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যাক্তিদের আসামি করে ঘাটাইল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন।
হাবিবুল্লাহর স্ত্রী ছবুরার জবানবন্দীতে জানান, আবু জাফর স্বপন বাড়ি ঘাটাইল উপজেলার সংগ্রামপুর ইউনিয়নের মুলবাড়ি গ্রামে। তার ছেলে হাবিবুল্লাহ (২৫) পেশায় একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। সে আট মাস আগে কালিহাতী উপজেলার বেলটিয়া গ্রামের মকবুল হোসেনের মেয়ে ছবুরাকে বিয়ে করে। বিয়ের কিছু দিন পর থেকেই শ্বশুর আবু জাফরের সাথে পুত্রবধূ ছবুরার অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে উঠে। পিতা আবু জাফর নানা কৌশলে নব বিবাহিত ছেলে হাবিবুল্লাকে রাতে বাড়ির পাশের বাজারের দোকানে রাত্রিযাপনের জন্য পাঠিয়ে দিত। বিষয়টি হাবিবুল্লাহর সন্দেহ হয়। এ অবস্থায় একদিন পিতার সাথে স্ত্রীর মেলামেশার দৃশ্য দেখে ফেলে। তারপর থেকেই বিষয়টি নিয়ে স্ত্রী ও পিতার সাথে মনমালিন্য হয়। তারপরও শ্বশুর ও পুত্রবধূর অনৈতিক সম্পর্ক চলতেই থাকে। এতে ক্ষিপ্ত হয় হাবিবুল্লাহ। এ অবস্থায় আবু জাফর ছেলে হাবিবুল্লাহকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করে। তার পরিকল্পনায় সায় দেয় পুত্রবধূ ছবুরা। তাদের পরিকল্পনা মোতাবেক গত ২৬ ডিসেম্বর রাতে ভাড়াটে খুনিরা হাবিবুল্লাহকে তুলে নেয়। সেই রাত থেকেই নিখোঁজ হয় হাবিবুল্লাহ। নিখোঁজের চারদিন পর গত ৩০ ডিসেম্বর সোমবার বিকেলে ঘাটাইল উপজেলার সংগ্রামপুর ইউনিয়নের বগা গ্রামের আব্দুল লতিফের বাড়ির পাশে এক চোখ উপড়ে ফেলা হাবিবুল্লাহর লাশ পাওয়া যায়।
ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাকসুদুল আলম জানান, শ্বশুর ও পুত্রবধূর পরকীয়ার সূত্র ধরেই হাবিবুল্লাহ খুনের ঘটনা ঘটেছে।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা