নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ-ঢাকা রুটে দুটি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করলেও সীমাহীন দুর্ভোগে রয়েছেন জেলার যাত্রীরা। প্রতিনিয়তই ট্রেনের টিকিট কালোবাজারিসহ ট্রেনের এডেনডেনসদের দুর্নীতির শিকার হন যাত্রীরা। এর ওপর রয়েছে ট্রেনে চুরি ছিনতাইয়ের উৎপাত। থাকে না ট্রেনে বিদ্যুৎ। এছাড়াও সাড়ে ৬ শত টিকিটের মধ্যে নেত্রকোনা জেলা সদরের জন্য মাত্র ৮১টি টিকিট রয়েছে হাওর এ´প্রেসে। যা একটি জেলা সদরের জন্য অপ্রতুল এবং লজ্জাজনকও বলে অভিযোগ শহরবাসীর।
অন্যদিকে ট্রেনের প্রায় অর্ধেক টিকিটই ময়মনসিংহের জন্য বরাদ্দ থাকায় ট্রেন থাকলেও দুর্ভোগে এই জেলার সাধারণ মানুষেরা।
ব্রিটিশ সরকার ধানে মাছে উদ্বৃত্ত জেলা নেত্রকোনার সাথে ঢাকার যোগাযোগ এবং কম খরচে পন্য পরিবহনের জন্য মাধ্যম হিসেবে স্থাপন করেছিল ঢাকা-মোহনগঞ্জ রেল সড়ক। পরবর্তীতে এই পর্যন্ত সংস্কার কাজ ছাড়া এই রেল সড়কের অন্য কোনো উন্নয়ন হয়নি।
তবে এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে ২০১৩ সনের ৩০ জুলাই বর্তমান সরকারের প্রথম পর্যায়ে একটি আন্তঃনগর “হাওর” এক্সপ্রেস চালু করে। কিন্তু নেত্রকোনা জেলার জন্য নামেমাত্র টিকিট রেখে ময়মনসিংহ, গফরগাওসহ এই রুটের সব স্টেশনে টিকিট ভাগ করে দেয়া হয়েছে। সেই সাথে জেলার মোহগঞ্জ উপজেলাতেই ট্রেনের অর্ধেক টিকিট বরাদ্দ দেয়া। রেলে আয় বৃদ্ধি দেখে পরবর্তীতে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস নামে আরও একটি ট্রেন দিলেও জেলা সদরে টিকিট সংকট আগের মতোই। মোহনগঞ্জ থেকে সিট খালি আসলেও টিকিট থাকে না। বেশি দর নিয়ে ওই উপজেলা থেকে টিকিট সংগ্রহ করাতে হয়। এছাড়া রয়েছে ট্রেনে চুরি ছিনতাইসহ টিকিট কালোবাজরির ঘটনা।
একটি জেলা সদরে টিকিট না দিয়ে সব টিকিট বাইরে রাখায় যেমন স্টেশন মাস্টারদের জবাবদিহিতা করতে হয় তেমনি যাত্রীদের রয়েছে ক্ষোভ। অপ্রতুল টিকিটের মধ্যেও আবার টিকিট থাকে কালোবাজারির হাতে। টিকিট কেটে অনেকেই বাড়তি টাকাও দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন। বাইরে টিকিটি না পেলেও ট্রেনের ভেতরে কর্মীদের কাছে খাবারের গাড়িতে টিকিট পাওয়া যায়।
এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ট্রেনের কর্মীরা বলেন, মাঝে মধ্যে টিকিট কাটা কোনো যাত্রী না গেলে সেখানে কাউকে সিট দেয়া হয়। এছাড়া কিছু নেই। তার ওপর রয়েছে চোর ছিনতাইয়ের ঘটনা। যখন তখন বিদ্যুৎ চলে যায়। এছাড়াও রাতের ট্রেনটি স্টেশেনে ঢোকার সময় স্টেশন এলাকায় চলে যায় বিদ্যুৎ। এমন সব উদ্ভট ঘটনার মধ্য দিয়েই চলাচল করতে হয় যাত্রীদের।
এদিকে, টিকিটের জন্য বাড়তি টাকা রাখা হয় না এবং চুরির বিষয়টি কেউ অভিযোগ করেনি বলে জানান ষ্টেশন মাস্টার রফি উদ্দিন। আবার ট্রেনের টিকিট বিন্যাসে বৈষম্যের কথা স্বীকার করে বলেন এ নিয়ে তিনি আবেদন পাঠিয়েছেন উর্ধ্বতন বরাবর।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম