২৬ জানুয়ারি, ২০২০ ১৭:০৯

সরিষার ফুল থেকে মধু সংগ্রহে চাষিরা

দিনাজপুর প্রতিনিধি

সরিষার ফুল থেকে মধু সংগ্রহে চাষিরা

দিনাজপুরসহ উত্তারাঞ্চলের সরিষার ক্ষেতগুলোতে হলুদের সমারোহ। ফুলে ফুলে মো, মো গন্ধ। মৌমাছিরা এক ফুল থেকে অন্য ফুলে গিয়ে সংগ্রহ করছে মধু।  মৌমাছির মাধ্যমে মধু আহরণ করছেন মৌচাষিরা। এভাবে মৌমাছির মধু আহরণের ফলে সরিষার ফুলে ফুলে পরাগায়ন ঘটে এবং শতকরা ২০-৩০ ভাগ বেশি ফলন হয় বলে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে।  মধু সংগ্রহে লাভবান হচ্ছেন মৌচাষিরা, অন্যদিকে মৌমাছির মাধ্যমে ফুলে ফুলে পরাগায়নের কারণে সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষক। তাই সরিষা ক্ষেতে কৃষক ও মৌচাষি উভয়ই লাভবান হয়ে থাকেন। আবার এতে বেকারত্বও দূর হচ্ছে। 

এদিকে সরিষার ক্ষেতে মৌমাছির বাক্স বসিয়ে মধু আহরণ করেন দিনাজপুরের বীরগঞ্জের মৌচাষি ইউসুফ আলী। বীরগঞ্জের নিজপাড়া ইউনিয়নের নখাপাড়া এলাকার সরিষার ক্ষেতে ১৫০টি মৌমাছির বাক্স বসিয়ে মধু আহরণ করছেন তিনি। ইউসুফ আলী বীরগঞ্জের শম্ভুগঞ্জ গ্রামের কল্যাণীহাট এলাকার বফির সরকারের ছেলে।
সরিষার মধু যেমন খাঁটি তেমনি সুস্বাদু। মানের দিক থেকেও উন্নত হওয়ায় এ মৌসুমে চাহিদাও বেশি। মধু উচ্চমাত্রার প্রাকৃতিক এন্টিবায়োটিক হওয়ায় ব্যাপক চাহিদা রয়েছে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির কাছেও। 
মৌচাষি ইউসুফ আলী বলেন, বীরগঞ্জের নিজপাড়া ইউনিয়নের নখাপাড়া এলাকার সরিষার ক্ষেতে ১৫০টি কাঠের বাক্স স্থাপন করেছেন। প্রতিটি বাক্সে একটি রানী  মৌমাছি, একটি পুরুষ মৌমাছি ও অসংখ্য এপিচ  মেইলিফ্রা জাতের কর্মী মৌমাছি রয়েছে। কর্মী মৌমাছিরা   মো মো গন্ধে ঝাঁকে ঝাঁকে ছুটে যায় সরিষার ফুলে ফুলে। পরে ফুলে থেকে মধু সংগ্রহ করে মৌমাছির দল নিজ নিজ কলোনিতে মৌচাকে এনে জমা করে। ১০/১৫ দিন পর পর প্রতিটি বাক্স থেকে চাষিরা ৫/৬ কেজি মধু সংগ্রহ করছেন। প্রতি সপ্তাহে একবার আট মণের মতো মধু পাওয়া যায়। কমপক্ষে সাত হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হয় মধু। এর আগে আমি সিরাজগঞ্জ জেলায় সরিষার ক্ষেতে বাক্স বসিয়েছিলাম। সেখানেও এক লাখ টাকার মধু বিক্রি করেছি। তবে গতবারের চেয়ে লাভ কম হবে। বিরূপ আবহাওয়ার কারণে লোকসানও হতে পারে।   
তিনি আরও জানান, শখের বশে এই মৌচাষ শুরু করেন। প্রথমে দেড় লাখ টাকা বিনিয়োগ করে ৩০টি বাক্স দিয়ে ২০১৬ সালে শুরু করেন। বর্তমানে ১৫০টি বাক্সে মধু চাষ করছেন। যে কেউ মনোযোগ দিয়ে চাষ করলে অবশ্যই লাভবান হতে পারবেন।
উল্লেখ্য, দিনাজপুরে সরিষার সঙ্গে চাষ করা হচ্ছে মৌমাছির। এতে সরিষার উৎপাদনও বেশি হচ্ছে এবং কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। কৃষি বিভাগের মতে, গত ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে দিনাজপুরে ১১ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করেন চাষিরা। 
বিডি প্রতিদিন/আল আমীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর