ওহাইও নদীর তীরে সিনসিনাতি শহর। যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ এ শহরে লোক সংখ্যা কম নয়। এ দেশের অন্যান্য শহরের তুলনায় অনেকটা ঘনবসতি। শহরে পাহাড় আর নদীর অপূর্ব সৌন্দর্য্য উপভোগ করা যায়। পাহাড়ের চূড়ায় থাকা বিল্ডিংগুলো রাতের অন্ধকারে জোনাকির মতোই জ্বলতে থাকে। সাপের মতো আঁকাবাঁকা বয়ে চলা ওহাইও নদী যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় দীর্ঘতম। মিসিসিপি নদীতে এর উৎসমুখ। ছড়িয়ে আছে ওহাইও, পেনসিলভানিয়া, ইলিনয়সহ আরও কত কত স্থানে। এ নদীর নাম ধরেই স্থানীয় লোকদের ওহাইওয়ান পরিচয়। তাদের অবশ্য বাকাই বলেও ডাকা হয়। ১৮৪০-এর দিকে বাকাই শব্দটা জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের নবম প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম হেনরি হ্যারিসনের নির্বাচনি প্রচারণায় বাকাই নামটি ব্যবহার করা হয়। তবে ওহাই নদীর কারণে ওহাইওয়ান নামটাই বহুল প্রচলিত এখানে।
সিনসিনাতি শহরও গড়ে উঠেছে এ নদীর কোল ঘেঁষে, পাহাড়-পর্বতের চূড়ায়। নদীর তীর থেকে অল্প দূরেই অবস্থিত টিকিউএল স্টেডিয়াম। শহরের মধ্যভাগে অবস্থিত এই স্টেডিয়াম সিনসিনাতি এফসির হোম গ্রাউন্ড। মেজর লিগ সকারে ইস্টার্ন কনফারেন্সে এ দল বেশ শক্তিশালী। চলতি মৌসুমে দুই নম্বরে অবস্থান করছে দলটি। সিনসিনাতি এফসির এ মাঠ এখন ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের দখলে। ২৬ হাজার দর্শক ধারণ ক্ষমতার স্টেডিয়ামে ম্যাচ ডেতে হাজারও দর্শক দল বেঁধে আসছেন খেলা দেখতে। পুরো শহরকে মাতিয়ে রাখছেন তারা। সমস্বরে গাইতে থাকেন। স্টেডিয়ামে তো বটেই, রাস্তাতেও।
টিকিউএল স্টেডিয়ামে শনিবার মধ্য রাতে (বাংলাদেশ সময়) মুখোমুখি হয় জার্মান ক্লাব বুরুসিয়া ডর্টমুন্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকার মেমেলোডি সানডাউন। রিয়াল মাদ্রিদের ইংলিশ তারকা জুড বেলিংহ্যামের ছোট ভাই জুব স্যামুয়েল বেলিংহ্যাম নজর কাড়লেন এ ম্যাচে। ছয় ফুট দুই ইঞ্চি উচ্চতার ১৯ বছরের এ তরুণ গতিতে পরাজিত করেছেন প্রতিপক্ষকে। বল ধরে রাখার ক্ষমতাও অন্যদের অনেক বেশি। ডিফেন্ডারদের ব্লকগুলো অদ্ভুত কৌশলে এড়িয়ে যান। অন টার্গেটে শট নিলে গোলরক্ষকের খুব বেশি কিছু করার থাকে না। ছোট ভাইয়ের মতোই জুড বেলিংহ্যাম এক সময় বুরুসিয়া ডর্টমুন্ডে খেলেছেন (২০২০-২৩)। আফ্রিকান ক্লাবের ডিফেন্স টিকতে পারেনি স্যামুয়েল বেলিংহ্যামের কাছে। ডর্টমুন্ড ৪-৩ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে। বেলিংহ্যামদের খেলা উপভোগ করেছেন ১৪ হাজার ছয়জন দর্শক। ডর্টমুন্ডের পক্ষে একটি করে গোল করেন ফেলিক্স, সেরহু ও জুব বেলিংহ্যাম। এ ছাড়া মেমেলোডি সানডাউন ক্লাবের খুলিসু মুদাও একটি আত্মঘাতী গোল করে ডর্টমুন্ডকে এগিয়ে দেন। তবে আফ্রিকান ক্লাবটিও কম লড়াই করেনি। লুকাসের ১১ মিনিটের গোলে সানডাউনই এগিয়ে যায় ম্যাচে। এরপর ইকরাম ও লেবো মোথিবা আরও একটি করে গোল করেন। ৭ গোলের ফুটবল উৎসব দেখে বাড়ি ফেরেন টিকিউএল স্টেডিয়ামের দর্শকরা।
ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ ধীরে ধীরে বেশ জমে উঠেছে। লাতিন আমেরিকান দলগুলো কঠিন চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে ইউরোপিয়ানদের। আফ্রিকানরাও জয় পেয়েছে। এখনো অবশ্য এশিয়ান ক্লাবগুলো জয়ের দেখা পায়নি।