ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের মূল লক্ষ্য হলো ইরানকে তাদের বশে আনা। তিনি ইরানিদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিদেশি ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হবে।
রবিবার তেহরানের এক মসজিদে দেয়া বক্তব্যে খামেনি বলেন, গত জুন মাসে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র যে হামলা চালায়, তা ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনাকে লক্ষ্য করে ছিল। এসব হামলার উদ্দেশ্য ছিল ইসলামি প্রজাতন্ত্রকে অস্থিতিশীল করা। এর জবাবে ইরান প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপও নিয়েছিল।
খামেনি অভিযোগ করেন, যুদ্ধ শুরুর পরদিনই ইউরোপে মার্কিন এজেন্টরা বৈঠক করে আলোচনা করেছিল, ইসলামি প্রজাতন্ত্রের পর ইরানে কী ধরনের সরকার বসানো হবে। তিনি বলেন, ‘আমেরিকা ইরানকে তাদের আনুগত্যে বাধ্য করতে চায়।’
তিনি উল্লেখ করেন, জুন মাসের ১২ দিনের যুদ্ধে ইরান ইতিহাসের সবচেয়ে তীব্র সংঘর্ষের মুখে পড়লেও, সেনাবাহিনী, সরকার ও জনগণের ঐক্যের কারণে দেশ শক্তিশালীভাবে টিকে গেছে। তার ভাষায়, ইরানি জাতি ঐক্যবদ্ধ থেকে শত্রুদের শক্ত জবাব দিয়েছে।
খামেনি সতর্ক করেন, বিদেশি শক্তিগুলো এখন ইরানের ভেতরে বিভাজন তৈরির চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, আমেরিকা ও ইসরায়েলের এজেন্টরা ইরানের ভেতরে ভেদাভেদ সৃষ্টি করতে চাইছে। তিনি বলেন, আল্লাহর কৃপায় বর্তমানে দেশ ঐক্যবদ্ধ। মতভেদ থাকলেও রাষ্ট্র ও দেশের স্বার্থে সবাই এক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লব এবং মার্কিন দূতাবাস জিম্মি সংকটের পর থেকে বিচ্ছিন্ন। এর পর থেকে ওয়াশিংটন বারবার ইরানের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, বিশেষত তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি ঘিরে। যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা ইরানকে পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে চাওয়ার অভিযোগ তোলে, তবে ইরান সবসময় তা অস্বীকার করেছে।
গত জুনে যুদ্ধ শুরু হয় যখন তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে ষষ্ঠ দফা আলোচনা হওয়ার কথা ছিল। সংঘাতের কারণে আলোচনা ভেস্তে যায়।
আগামী মঙ্গলবার ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানির সঙ্গে ইরানের নতুন করে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। ইউরোপীয় দেশগুলো হুঁশিয়ারি দিয়েছে—কোনো সমঝোতা না হলে তারা আবারও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল