বাংলাদেশের ক্রিকেটের পরিচিত মুখ মাহাবুব আনাম। ২০০৪ সাল থেকে বিসিবি কার্যকরী পরিষদে রয়েছেন। একসময় বিসিবির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বিসিবির বর্তমান কমিটির অন্যতম প্রভাবশালী পরিচালক। শোনা গিয়েছিল বিসিবির আসন্ন নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন তিনি। কিছুদিন আগে আবার জানিয়েছেন, বিসিবির আসন্ন নির্বাচনে অংশ নেবেন না। অথচ ক্লাব পরিচালকদের ক্যাটাগরি-২ নির্বাচনে প্রতিনিধিদের তিনিই গোছাচ্ছিলেন। শুধু তাই নয়, শোনা যাচ্ছিল বিসিবির সভাপতি পদেও নির্বাচন করবেন।। নির্বাচন করবেন না, মাহাবুব আনামের এমন ঘোষণা নির্বাচনের সব আলো টেনে নিয়েছেন। তিনি নির্বাচন না করলেও ঢাকার ক্লাবগুলো গতকাল বৈঠক করে নির্বাচনের উত্তাপ ছড়ানো শুরু করেছে। নির্বাচনের হাওয়া বইছে এখন বিসিবিতে। ক্লাব প্রতিনিধিরা স্পষ্ট করেছেন নির্বাচন করতে প্রস্তুত। অবশ্য নির্ধারিত সময়ে বিসিবির নির্বাচন হবে কি না, অনেক প্রতিনিধিই শঙ্কা পোষণ করেছেন। এদিকে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ বিসিবির নির্বাচন প্রসঙ্গে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি। বিসিবির নির্বাচন আয়োজিত হয় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের তত্ত্বাবধানে।
চলতি বোর্ডের মেয়াদ শেষ ৩০ সেপ্টেম্বর। বর্তমান কমিটি দায়িত্ব গ্রহণ করেছিল ৯ অক্টোবর, ২০২১। শোনা যাচ্ছে, বিসিবির নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ ১৩ অক্টোবর। এখন এ সময়ে নির্বাচন কি হবে? ঢাকার ক্লাবগুলোর প্রতিনিধিরা একাট্টা হয়ে গতকাল মিরপুর স্টেডিয়ামে জানিয়েছেন, তারা নির্বাচন করতে প্রস্তুত। কোনোভাবেই অ্যাডহক কমিটি মেনে নেবেন না। বাজারে গুঞ্জন, অ্যাডহক কমিটি গঠন করে বিসিবির পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালনার। যা বিসিবির গঠনতন্ত্রেও নেই।
বিসিবির পরিচালক ২৫ জন। দুজন পরিচালক জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের। ক্যাটাগরি-১ বা জেলা ও বিভাগ ক্যাটাগরি থেকে ১০ জন, ক্লাব প্রতিনিধি বা ক্যাটাগরি-২ থেকে ১২ জন এবং ক্যাটাগরি-৩ থেকে পরিচালক একজন। ২৩ জন পরিচালক আসবেন সরাসরি ভোট করে এবং বাকি দুজন ক্রীড়া পরিষদের। পরিচালনা পর্ষদের ২৫ পরিচালক সরাসরি ভোটে সভাপতি নির্বাচিত করবেন। ক্লাবগুলোর প্রতিনিধিরা গতকাল সবাই বসেছিলেন মিরপুর স্টেডিয়ামে। মিডিয়ার মুখোমুখিতে ক্লাবগুলোর প্রতিনিধি হিসেবে বিসিবির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বাবু বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন সূত্রে জানতে পেরেছি, বিসিবি পরিকল্পনা করছে অ্যাডহক কমিটি গঠন করে কার্যক্রম পরিচালনা করতে। আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই, কোন পরিস্থিতিতে এবং গঠনতন্ত্রের ধারা মেনে অ্যাডহক কমিটি গঠন করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে, এটা স্পষ্ট করে জানাতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, অ্যাডহক কমিটি গঠন করার কোনো বিধান নেই।’ সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আরও বলেন, ‘যারা অ্যাডহক কমিটি গঠন করতে চাইছেন, তাদের বলতে চাই কি এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে যে অ্যাডহক কমিটি গঠন করতে হবে। যারা অ্যাডহক কমিটি গঠন করতে চাইছেন, তারা ক্রিকেট নিয়ে ষড়যন্ত্র করছেন। তারা ক্রিকেটকে দূষিত করতে চাইছেন।’ রফিক বাবু আরও বলেন, ‘আমরা ক্লাবগুলো আশা করছি, নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন হবে। আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যেই পরিষ্কার হবে নির্বাচনের সময়।’
কিছুদিন আগে অ্যান্টি করাপশন ইউনিট (আকসু) ১২ ক্লাবের কার্যক্রম নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে। সৈয়দ বোরহানুল পাপ্পু জানান, বর্তমান গঠনতন্ত্রের আলোকেই নির্বাচন হবে, ‘আকসু জানিয়েছে বিসিবির গঠনতন্ত্র লিগ্যাল। সেজন্য এ গঠনতন্ত্রের কোনো পরিবর্তনের দরকার নেই। বিসিবির নির্বাচন হবে বর্তমান গঠনতন্ত্রের আলোকেই।’ মাহাবুব আনামের নির্বাচনে অংশ না নেওয়া প্রসঙ্গে পাপ্পু বলেন, ‘নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর বিষয়টি মাহাবুব আনামের একান্তই ব্যক্তিগত। তিনি ৩০ বছর ধরে ক্রিকেটকে সার্ভিস দিয়ে আসছেন।’ বিসিবির নির্বাচন নিয়ে ঢাকার ক্লাবগুলো ব্যস্ত প্রতিনিধি মনোনয়নে। শোনা যাচ্ছে, অধিকাংশ ক্লাবই তাদের প্রতিনিধি চূড়ান্ত করে ফেলেছে।