হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ কোনো রাজনৈতিক দল নয়। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হেফাজতে ইসলাম কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার বা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়নি।
সোমবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) শফিকুল কবির মিলনায়তনে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মামুনুল হক বলেন, হেফাজতে ইসলাম একটি অরাজনৈতিক সংগঠন। সংগঠনের কোনো সিদ্ধান্ত হলে সেটি আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে। সংগঠনের কেউ ব্যক্তিগতভাবে কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে রাজনীতি করলে, সেটি তার ব্যক্তিগত বিষয়।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সঙ্গীত শিক্ষক নিয়োগ বাতিল ও ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের নতুন বিধিমালা প্রণয়ন, কুরআন অবমাননার বিচার, এবং কাঠামোগত ইসলামবিদ্বেষ ও ধর্ম অবমাননা রোধে সর্বোচ্চ কঠোর আইন প্রণয়নের দাবিতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব সাজিদুর রহমানসহ শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় মামুনুল হক আরও বলেন, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা আমাদের নীতিমালার পরিপন্থি। আমাদের আমির সবসময় ধর্মীয় বিষয়ে বক্তব্য দেন। তিনি যদি কোনো বক্তব্য দিয়ে থাকেন, সেটি তার ব্যক্তিগত মত। সংগঠনের সিদ্ধান্ত হলে সেটি আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে।
তিনি বলেন, আমাদের সংগঠনের কোনো নেতাকর্মী যদি ব্যক্তিগতভাবে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নেন, সেটি তার ব্যক্তিগত স্বাধীনতা। তবে হেফাজতে ইসলাম সাংগঠনিকভাবে কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নয়।
সংবাদ সম্মেলনে হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব সাজিদুর রহমান বলেন, সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নাচ-গানের শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছে। আমাদের সুফি-জনতা এসব চায় না। তারা ইসলামী আদর্শের শিক্ষা ও সমাজব্যবস্থা চায়। অভিভাবকরাও তাদের সন্তানদের গান-বাজনা শেখাতে স্কুলে পাঠান না। আমরা সরকারকে অনতিবিলম্বে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সঙ্গীত শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত বাতিল করে সব বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের নতুন বিধিমালা প্রণয়নের আহ্বান জানাচ্ছি। পাশাপাশি কুরআন অবমাননার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান রেখে কঠোর আইন প্রণয়নের দাবি জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের তিন দফা দাবি জানায়। সেগুলো হলো:
১. অনতিবিলম্বে সঙ্গীত শিক্ষক নিয়োগের বিধিমালা বাতিল করে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের বিধিমালা জারি করতে হবে।
২. কুরআন অবমাননার দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি দীর্ঘ বিচারহীনতার ফলে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার প্রবণতা রোধে মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানসহ সব ধর্মাবলম্বীর ধর্মীয় অনুভূতির সুরক্ষায় ধর্ম অবমাননার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ কঠোর আইন প্রণয়ন করতে হবে।
৩. রাষ্ট্রীয়ভাবে ৫ মে তারিখকে ‘শাপলা গণহত্যা দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করতে হবে।
বিডি প্রতিদিন/কেএ