ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সংসদীয় আসনের খসড়া সীমানা নিয়ে দাবি-আপত্তি সংক্রান্ত শুনানিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের পক্ষে-বিপক্ষে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে হট্টগোল ও হাতাহাতি হয়েছে।
রবিবার দুপুরে প্রথম দিনের মতো শুনানি শুরু হয়। এ সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনাররা উপস্থিত ছিলেন।
তাদের সামনে দুপুর পৌনে ১টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিএনপির দুই পক্ষের নেতাকর্মীরা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন।
২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে সরাইল ও আশুগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত ছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ সংসদীয় আসন। ২০২৫ সালে এসে সরাইল ও আশুগঞ্জ এবং বিজয়নগর উপজেলার বুধস্তি, চান্দুয়া ও হরষপুর ইউনিয়নকে নিয়ে এই আসন গঠন করা হচ্ছে।
২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে জেলা সদর ও বিজয়নগর উপজেলা নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ সংসদীয় আসন গঠিত ছিল। ২০১৫ সালে জেলা সদর এবং বিজয়নগর উপজেলার ইছাপুর, চম্পানগর, পত্তন, দক্ষিণ সিংগারবিল, বিষ্ণপুর, চর ইসলামপুর ও পাহাড়পুর ইউনিয়ন নিয়ে এ আসন গঠিত হচ্ছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও ৩ আসনের খসড়া প্রকাশের পর পক্ষে ও বিপক্ষে আবেদন জমা পড়ে।
রবিবার দুপুরে শুনানির একপর্যায়ে দুই পক্ষ উত্তেজিত হয়ে পড়ে এবং হাতাহাতি শুরু করেন। এরপর ইসি কর্মকর্তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে ইসি সচিব ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের জন্য শুনানি শেষ করেন এবং তাদের শুনানি কক্ষ ত্যাগ করার অনুরোধ জানান।
শুনানিতে অংশ নিয়ে বিএনপির রুমিন ফারহানা ইসির প্রকাশিত খসড়ার পক্ষে তার যুক্তি তুলে ধরেন। এছাড়া, খসড়ার বিপক্ষে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেন অন্যান্য বেশ কয়েকজন নেতা।
খসড়ার বিপক্ষে থাকা শুনানিতে অংশ নেওয়া নেতারা বলেন, বিজয়নগর উপজেলা থেকে তিনটি ইউনিয়ন (বুধস্তি, চান্দুয়া ও হরষপুর) ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে যুক্ত করা হয়েছে।
সংসদীয় আসন গঠনে এ উপজেলাকে অখণ্ড রাখার দাবি জানান তারা।
এদিকে, হাতাহাতির ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়েছেন বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা।
তিনি বলেন, অত্যন্ত দুঃখজনক ব্যাপার হলো এখানে একটি মারামারি হয়েছে। আমি যেহেতু একজন আইনজীবী... আমি মনে করেছি, আমার কেস আমি নিজেই প্রেজেন্ট করব। সো আমার কেস আমি প্রেজেন্ট করেছি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ এর যিনি প্রার্থী, তিনি সদলবলে ২০/২৫ জন মিলে গুন্ডা-পান্ডার মতন... তাদের আচরণ অত্যন্ত দুঃখজনক ও অত্যন্ত লজ্জাজনক। আমি মনে করি এটা কমিশনের যে সম্পত্তি... যে গাম্ভীর্য এবং যে সম্মান, সেটার সঙ্গে এটা যায় না।
ক্ষোভ জানিয়ে তিনি বলেন, ১৫ বছরে যা হয়নি তা আজ হয়েছে। যে বিএনপির নেতাকর্মীদের জন্য ১৫ বছর লড়াই করেছি, তারাই এখন ধাক্কা দেয়। নির্বাচনের আগে সীমানা নিয়ে নিজের দলে এমন পরিস্থিতি হলে নির্বাচনে কী হবে তা অনুমেয়।
রুমিন ফারহানা বলেন, আজকে অলমোস্ট গায়ে ধাক্কা দিয়ে আমাকে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। যেই বিএনপির নেতাকর্মীদের জন্য গত ১৫ বছর লড়াই করলাম, তারা আমাকে এখন ধাক্কা দেয়। তো ঠিক আছে, ধাক্কার বদলে তো ধাক্কা আসবেই।
বাইরেও হট্টগোল
এ সময় নির্বাচন ভবনের বাইরেও হট্টগোল হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সদস্যরা হট্টগোলকারী একটি দলকে গেটের সামনে থেকে সরিয়ে দেন। নির্বাচন ভবনের সামনে জলকামানও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
এ দিন শুনানির শুরুতে সিইসি স্বাগত বক্তব্য রাখার পর সাংবাদিকদের আর সেখানে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে আগামী ২৭ আগস্ট পর্যন্ত শুনানি চলবে।
বিডি প্রতিদিন/কেএ