বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) কিক স্কলারশিপ প্রোগ্রাম প্রকল্পের চুক্তিভিত্তিক কোর্স ইন্সট্রাক্টর পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে কোটা আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক (সাবেক) রহমত আলীকে। নারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে অনৈতিক বার্তা পাঠানো এবং নিয়মিত ক্লাস না নেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় জার্মানভিত্তিক অর্থায়নকারী সংস্থার সিদ্ধান্তে তাঁকে চাকরিচ্যুত করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার সংস্থাটির জরুরি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
শুক্রবার রাতে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. শওকাত আলী।
তিনি বলেন, ‘নারী শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আসার পর সংস্থাটি বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করে। পরে তারা জরুরি সভা করে তাঁকে কোর্স ইন্সট্রাক্টরের পদ থেকে বহিষ্কার করে। যেহেতু তাঁর নিয়োগ, বেতন সব কিছুই ওই সংস্থা বহন করে, তাই তারা নতুন ইন্সট্রাক্টর নিয়োগ দেবে। এর আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে রহমত আলীর পাঠানো একাধিক চ্যাটের স্ক্রিনশট ছড়িয়ে পড়ে।
ওই স্ক্রিনশটগুলোতে দেখা যায়, তিনি এক নারী শিক্ষার্থীর উদ্দেশে লিখেছেন—‘তোমার প্রতি আমার প্রবল আকর্ষণ’, ‘আই নিড ইউ’। বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
অভিযোগ শুধু অনৈতিক মেসেজেই থেমে নেই, শিক্ষার্থীদের আরো অভিযোগ, সাবেক সমন্বয়ক রহমত আলী নিয়মিত ক্লাস না নিয়ে বরং সারা দিন রাজনীতি ও আন্দোলন নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন।
তাঁর কোর্সের শিক্ষার্থী মো. রাসেল বলেন, ‘তিনি নিয়মিত ক্লাসে আসতেন না। যখন মন চাইত আসতেন। আবার বেশির ভাগ সময় রাজনীতি নিয়ে থাকতেন।’
এ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ গড়ার দায়িত্ব যাঁদের হাতে, তাঁরা যদি এভাবে অসাধু কাজে জড়িয়ে পড়েন, তবে সেটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী জানান, রহমত আলী দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে প্রভাব খাটাতেন। নিয়মিত পড়াশোনার পরিবেশ ব্যাহত করার পাশাপাশি নারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাঁর অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ আগেও উঠেছিল। তবে এবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রমাণসহ বিষয়টি প্রকাশিত হওয়ায় কর্তৃপক্ষ আর উপেক্ষা করতে পারেনি।
এ বিষয়ে রহমত আলী বলেন, ‘আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা বলা হচ্ছে। আশা করছি, অতি দ্রুত সব সমস্যার সমাধান করা হবে।’
রহমত আলী ছিলেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক। আন্দোলন চলাকালে তিনি আলোচনায় এলেও পরে বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে তাঁর নাম উঠে আসে। সূত্র: কালের কণ্ঠ
বিডি প্রতিদিন/নাজিম