বরিশালের মুলাদীতে বাবার নির্দেশে দুই ভাই মিলে আরেক ভাইয়ের দুই চোখ তুলে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গত শুক্রবার রাতে উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের সাহেবেরচর গ্রামের আরশেদ বেপারীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ব্যক্তি হলেন রিপন বেপারী (৫০)। তিনি আরশেদ বেপারীর সেজো ছেলে। বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বাবা আরশেদ আলী বেপারী বলেন, ভাইদের সঙ্গে মারামারি হয়। তখন গ্রামবাসী এসেছিল। কে চোখ তুলেছে আমি জানি না। পুলিশ জানায়, রিপনের বিরুদ্ধে ঢাকার রমনা থানায় চুরি ও ছিনতাইয়ের আটটি মামলা রয়েছে। এ ছাড়া মুলাদী থানায় হত্যা মামলাসহ তার বিরুদ্ধে কমপক্ষে ২০টি মামলা রয়েছে।
পরিবার ও স্থানীয়রা জানান, চুরি, ছিনতাই করে জমানো ৩৫ লাখ টাকা ও ২০ ভরি স্বর্ণালংকার মেজো ভাই রোকন বেপারীর কাছে গচ্ছিত রেখেছিলেন রিপন। এই টাকা ও স্বর্ণ ফেরত চাইলে ভাইদের সঙ্গে বিরোধ বাধে তার। এ নিয়ে ঝগড়াঝাটির একপর্যায়ে বাবা আরশেদ বেপারী রাগের মাথায় রিপনকে মারধর করে চোখ তুলে ফেলার কথা বলেন। বাবার এমন কথা শুনে রোকন ও স্বপন মিলে রিপনকে মারধর করে এবং দুই চোখ তুলে ফেলেন।
সাহেবেরচর গ্রামের বাসিন্দা এনামুল হক জানান, রিপন বেপারী পরিবার নিয়ে ঢাকায় থাকেন। তিনি বিভিন্ন সময়ে চুরি, ছিনতাই ও প্রতারণা করে মানুষের টাকা ও স্বর্ণালংকার হাতিয়েছেন। এ টাকা ও স্বর্ণ মেজো ভাই রোকন বেপারীর কাছে গচ্ছিত রাখতেন বলে দাবি করে আসছিলেন রিপন। প্রায় তিন মাস আগে রিপন বেপারী তার ভাইয়ের কাছে গচ্ছিত টাকা ও স্বর্ণালংকার ফেরত চান। ওই সময় রোকন বেপারী ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের মধ্যে কলহ হয়। এনিয়ে একাধিকবার এলাকায় সালিশ বৈঠকও হয়েছে। শুক্রবার বিকালে রিপন ঢাকা থেকে বাড়িতে আসেন। তিনি মেজো ভাই রোকন বেপারীর কাছে টাকা চান। কিন্তু তিনি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে দুই ভাইয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। রাত ১১টার দিকে রিপন বাড়ি ফিরলে আবার তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে তার বাবা আরশেদ বেপারী ক্ষিপ্ত হয়ে রিপনকে মারধর করে চোখ তুলে ফেলার কথা বলেন। বাবার কথা শুনে রোকন ও স্বপন মিলে রিপনকে মারধর করেন এবং দুই চোখ তুলে ফেলেন।
মুলাদী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মাসুদ বলেন, পারিবারিক বিরোধের জেরে দুই ভাই মিলে আরেক ভাইয়ের চোখ উৎপাটন করেছেন। ঘটনার পর অভিযুক্তরা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় মামলায় হয়নি।