আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের সেনা আইনে বিচারের দাবি জানিয়েছে এক্স-ফোর্সেস অ্যাসোসিয়েশন। প্রয়োজনে সেনা আইন সংশোধন করে গুমের মতো অপরাধে যুক্ত কর্মকর্তাদের বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে তারা।
গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট সাইফুল্লাহ খান সাইফ। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘আমরা অপরাধীদের বিচারের পক্ষে, তবে সেই বিচার হতে হবে স্বচ্ছ, সুনির্দিষ্ট প্রমাণের ভিত্তিতে এবং সংবিধান ও মানবাধিকারের মূলনীতির আলোকে, যেখানে কোনো ফুলস্টপ থাকবে না।’ তিনি বলেন, আর্জেন্টিনা, চিলি, মেক্সিকো এবং তুরস্কে ডিক্টেটরদের বিচার সেনা আইন সংশোধনের মাধ্যমে হয়েছে। আইসিটি আইনে বিচার হলে আসামিরা ভবিষ্যতে পার পেয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করেন তিনি। সাইফ বলেন, কোনো নাগরিকের মৌলিক অধিকার হরণ করা সংবিধানবিরোধী। রাষ্ট্র ও সংবিধান স্পষ্টভাবে বলেছে-কোনো ব্যক্তি চূড়ান্তভাবে অপরাধী প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত তাকে অপরাধী বলা যাবে না। এমনকি সে যদি প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হয়, তাহলে তার চাকরি আইনগতভাবে বহাল থাকবে।
বক্তব্যে তিনি বলেন, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নিয়োজিত সদস্যদের মনোবল ভেঙে দেওয়া বা বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের সম্মান ক্ষুণ্ন করা কোনো দেশপ্রেমিকের কাজ হতে পারে না। আর কোনো সেনা সদস্যকে গ্রেপ্তারের পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছে সরকার। এই বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, তদন্ত করতে গিয়ে আরও ক্রিমিনাল বের হবে, ফলে আর পরিকল্পনা নেই বলে ফুলস্টপ দেওয়া যাবে না। এটা করা হলে বিচারের স্বচ্ছতা থাকবে না। তিনি বলেন, যাদের নাম এসেছে, তাদের বাইরে আরও অনেক রাঘববোয়াল আছে, তাদের নাম আসে নাই। এর মধ্যে অন্যতম সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ।
সংবাদ সম্মেলনে অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রোকন উদ্দিন বলেন, পরবর্তী সরকার এই আইন যদি (আইসিটির সংশোধনী) পাস না করে তাহলে আসামিরা পার পেয়ে যেতে পারেন। তিনি বলেন, কোনো ব্যক্তিগত আক্রোশ, পুঞ্জীভূত ক্ষোভের কারণে স্বৈরাচারের মতো জুডিশিয়ারিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ইচ্ছেমতো তড়িঘড়ি করে যেন বিচার না করা হয়। আইন সংশোধন করে যেন বিচার করা হয় যাতে এখানে ত্রুটি না থাকে। পরবর্তী সমেয় এটা যেন প্রশ্নবিদ্ধ না হয়।