নির্বাচনি বিধিমালায় না থাকায় জাতীয় নাগরিক পার্টিকে (এনসিপি) ‘শাপলা’ প্রতীক দেওয়ার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন-ইসি। আগামী ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে। ইতোমধ্যে কেনাকাটার কাজ শেষ করেছে কমিশন। জাতীয় নির্বাচনের এমন প্রস্তুতির মধ্যে গণভোটের আলোচনা ঐকমত্য কমিশনে হলেও তা নিয়ে ইসির কাছে সরকারের তরফ থেকে কোনো তথ্য নেই। সংসদ নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতির অগ্রগতি এবং বিরাজমান পরিস্থিতিতে দিকনির্দেশনা দিতে এবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকে বসছে ইসি।
গতকাল আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। ইসি সচিব বলেন, নির্বাচনি বিধিমালায় না থাকায় এনসিপিকে ‘শাপলা’ প্রতীক দেওয়ার সুযোগ নেই। আগামী ১৯ অক্টোবরের মধ্যে এনসিপি বিধিমালার প্রতীকের তালিকা থেকে পছন্দের প্রতীক না জানালে কমিশন নিজের মতো করে সিদ্ধান্ত নেবে। নির্বাচন কমিশন নির্ধারিত তালিকা থেকে পছন্দের প্রতীক নিতে এনসিপিকে সময় বেঁধে দেওয়ার পর শাপলার পক্ষে সোশ্যাল মিডিয়ায় সোচ্চার হয়েছেন দলটির নেতারা। এনসিপি দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ ফেসবুকে লেখেন, ‘এনসিপি শাপলাই পাবে।’ এ ছাড়া গণমাধ্যমকে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন বলেন, প্রতীক বরাদ্দ নিয়ে ইসির আচরণ স্বৈরতান্ত্রিক। ইসি এমন স্বৈরতান্ত্রিক আচরণ অব্যাহত রাখলে এনসিপি নির্বাচনে অংশ নেবে না।
২০ অক্টোবর আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক বৈঠক : ইসি সচিব বলেন, আগামী ২০ অক্টোবর আইনশৃঙ্খলার সঙ্গে যে সব সংস্থা জড়িত রয়েছে তাদেরকে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তাদের সঙ্গে আমরা আলোচনা করব। সচিব বলেন, ফেব্রুয়ারি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমাদের নির্বাচনি যে সমস্ত মালামাল রয়েছে সেগুলো আমাদের সংগ্রহে চলে এসেছে। আগামী নির্বাচন পিআর পদ্ধতিতে ও গণভোট নিয়ে দলগুলোর প্রস্তাবের বিষয়ে ইসি সচিব বলেন, (পিআর) এ ব্যাপারে আমার বাড়তি কোনো মন্তব্য করার সুযোগ নাই। চূড়ান্তভাবে ইসি যখন এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে তখন জানাব। আর গণভোটের ব্যাপারেও একই কথা।
তিনি বলেন, গণভোট কখন হবে বা আদৌ হবে কি না, এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনে এখনো পর্যন্ত কোনো বিষয় উপস্থাপিত হয়নি। যেটা উপস্থাপিত হয়নি সে বিষয়ে কথা বলার সুযোগই আমার নেই।
প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন আরও আট দেশে ও নিবন্ধন অ্যাপ : ইসি সচিব বলেন, প্রবাসী ভোটারদের কাজের অগ্রগতি চলছে। এখন পর্যন্ত আমরা ১১টা দেশে নিবন্ধন কার্যক্রম চালাচ্ছি। অ্যাপ ডেভেলপমেন্টের কাজটা আমরা আশা করছি এ মাসের শেষ সপ্তাহে অথবা নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে চালু করতে পারব।
পর্যবেক্ষকদের সংখ্যা কমছে : জাতীয় নির্বাচনের আগে নিবন্ধন দিতে এবার ৭৩টি পর্যবেক্ষক সংস্থাকে বাছাই করেছে ইসি। এর মধ্যে এসব সংস্থা নিয়ে কারও আপত্তি রয়েছে কি না তা নিয়ে বিজ্ঞপ্তিও দিয়েছে। কিছু সংস্থার অস্তিত্ব নিয়ে গণমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার পর এ সংখ্যা কমার আভাস দিয়েছেন ইসি সচিব আখতার আহমেদ। তিনি বলেন, এই তালিকা পর্যালোচনা চলছে।
প্রসঙ্গ, নতুন দল নিবন্ধন : ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের ব্যাপারে কিছু রাজনৈতিক দল, প্রধানত ১২টা দলের ব্যাপারে অতিরিক্ত তথ্যানুসন্ধান করার জন্য মাঠপর্যায়ে আমাদের কর্মকর্তাদের নিয়োজিত করেছি। সচিবালয় এবং মাঠপর্যায় দুটি মিলিয়ে এ তথ্যানুসন্ধান করা হচ্ছে এবং আমরা আশা করছি আগামী সপ্তাহে এটার একটা সমাধানে আসতে পারব।