যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও চীনের সঙ্গে বাণিজ্য উত্তেজনার ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি চীনের পক্ষ থেকে মার্কিন সয়াবিন কেনা বন্ধ করাকে ‘অর্থনৈতিকভাবে বৈরী পদক্ষেপ’ বলে মন্তব্য করেছেন। প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র চীনের কাছ থেকে রান্নার তেলসহ কিছু পণ্য কেনা বন্ধের চিন্তা করছে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প।
নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’–এ ট্রাম্প লিখেছেন, আমরা চীনের কাছ থেকে রান্নার তেল এবং অন্যান্য বাণিজ্যিক পণ্য আমদানি বন্ধের কথা বিবেচনা করছি। এটি প্রতিশোধমূলক সিদ্ধান্ত হতে পারে।
তবে এর কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘চীনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক মোটামুটি ভালো। সব ঠিক থাকলে ভালো, না থাকলেও সমস্যা নেই।’
ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতির এই দেশের মধ্যে বাণিজ্য উত্তেজনা তীব্র হয়েছে। এক পর্যায়ে উভয় দেশের শুল্কহার তিন অঙ্কে পৌঁছায়।
এর আগে সোমবার ফিনান্সিয়াল টাইমস–এ এক সাক্ষাৎকারে মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট অভিযোগ করেন, চীন বিরল খনিজ পদার্থের রপ্তানিতে নতুন নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে বৈশ্বিক অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে চাইছে। এসব খনিজ গাড়ি, ইলেকট্রনিকস ও প্রতিরক্ষা শিল্পে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
ট্রাম্প বলেন, প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভালো, কিন্তু কখনো কখনো তা উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে ওঠে। কারণ চীন সব সময় সুযোগ নিতে চায়। তিনি আরও বলেন, যখন কেউ ঘুষি মারে, তখন প্রতিরোধের প্রস্তুতি থাকতে হয়।
ট্রাম্পের দাবি, চীনের সয়াবিন কেনা বন্ধের সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের কৃষকদের ক্ষতিগ্রস্ত করছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রে বায়োডিজেল উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় ব্যবহৃত রান্নার তেলসহ বিভিন্ন ধরনের তেলজাত পণ্যের আমদানি দ্রুত বেড়েছে।
অন্যদিকে, চীন বিরল খনিজের রপ্তানিতে নতুন নিয়ন্ত্রণ আরোপের পর যুক্তরাষ্ট্রও পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। ট্রাম্প বলেছেন, ১ নভেম্বর থেকে চীনের পণ্যে অতিরিক্ত ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে।
মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার জানিয়েছেন, এই সময়সূচি আরও এগিয়ে আনা হতে পারে। তিনি বলেন, সবকিছু নির্ভর করছে চীন কী করে তার ওপর।
চীন এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘দ্বৈত নীতি’ অনুসরণের অভিযোগ করেছে এবং জানিয়েছে, তারা শেষ পর্যন্ত লড়াই করবে।
এদিকে, গত সপ্তাহে ট্রাম্প সতর্ক করেন, চলতি মাসের শেষে শুরু হতে যাওয়া এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশন সম্মেলনে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে তার বৈঠক বাতিল হতে পারে।
সব মিলিয়ে দুই পরাশক্তির মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধ আবারও নতুন রূপ নিচ্ছে। যদিও কিছু পর্যায়ে উত্তেজনা কমেছে, তবুও সম্পর্ক এখনো অনিশ্চিত এবং ভঙ্গুর অবস্থায় রয়েছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল