লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় সরকারি হাসপাতালের নার্সদের বিরুদ্ধে এক প্রসূতিকে নরমাল ডেলিভারির বিষয়ে অসহযোগিতার অভিযোগ উঠেছে। পরে বিপাকে পড়ে ক্লিনিকে নেওয়ার পথে ভ্যানের উপর সন্তান প্রসব করেন মনিফা বেগম। শুক্রবার রাত ১২টার দিকে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে একটি ফুটফুটে ছেলে সন্তানের জন্ম দেন তিনি। মনিফা বেগম ওই উপজেলার পূর্ব বিছনদই গ্রামের দিনমজুর রুহুল আমিনের মেয়ে।
জানা গেছে, প্রসব বেদনা নিয়ে হাসপাতালে আসেন মনিফা ও তার পরিবার। নার্সরা মনিফার নরমাল ডেলিভারি না করিয়ে প্রাইভেট ক্লিনিকে সিজার করার জন্য চাপ দেন। মনিফার বাবা দিনমজুর রুহুল আমিনের বারবার অনুরোধ করার পরও তারা নরমাল ডেলিভারি করেননি। পরে বাধ্য হয়ে ভ্যানে করে প্রাইভেট হাসপাতালে নেওয়ার পথে ছেলের জন্ম দেন মনিফা।
মনিফার বাবা রুহুল আমিন জানান, প্রসব বেদনা হওয়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয় মনিফাকে। এরপর নার্স তাহমিনা ও রঞ্জিলা বেগম তাকে প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে সিজারের জন্য চাপ দিতে থাকেন। সিজার করার সামর্থ্য নেই, এ কারণেই নরমাল ডেলিভারি করানোর জন্য আমার মেয়েকে সরকারি হাসপাতালে এনেছি। কিন্তু নার্সরা কোনোভাবেই রাজি হননি। নিরুপায় হয়ে প্রাইভেট ক্লিনিকে নেওয়ার জন্য আমার মেয়ের ভ্যানে ওঠাতেই তার সন্তান জন্ম নেয়। ওই সময় স্থানীয় এক নারী আমাদের সহযোগিতা করেন।
ভুক্তভোগী মনিফা বেগম বলেন, আমি ব্যথায় মারা যাচ্ছিলাম। নার্স তাহমিনা ও রঞ্জিলা বেগম আমাকে কোনো সহযোগিতা করেননি, উল্টো ভয় দেখিয়ে প্রাইভেট ক্লিনিকে যেতে বলেন। এখন আল্লাহর রহমতে আমি ও আমার ছেলে ভালো আছি।
তবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র স্টাফ নার্স তাহমিনা বেগম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমরা অনেক চেষ্টা করেছি। মনিফার জীবনের ঝুঁকি থাকায় আমরা ঝুঁকি নিতে চাইনি।
আরেক সিনিয়র স্টাফ নার্স রঞ্জিলা বেগম বলেন, ওই প্রসূতির গর্ভে বাচ্চাটি উল্টো হয়ে ছিল। তার একটি পা জরায়ুর বাইরে বের হয়ে ছিল। তাই আমরা ঝুঁকি না নিয়ে সিজার করতে বলেছি।
এ ব্যাপারে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নাইম হোসেনের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল