বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা একটি আধা স্বায়ত্তশাসিত (কেপিআই অন্তর্ভুক্ত) সরকারি সংস্থা। এটি দেশি সিনেমা শিল্পের প্রাণকেন্দ্র। কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরে নিরাপত্তাব্যবস্থা বলতে কিছুই নেই এখানে। তাই শিল্পী-কলাকুশলী আর নির্মাতারাও এখানে আসতে ভয় পান। হামলা, চুরি, সভা, সমিতি, মিছিল, আন্দোলন, অসামাজিক কর্মকাণ্ড, মাদক সেবন সবই চলছে নির্দ্বিধায়। তাই চলচ্চিত্র নির্মাণকাজও কমে গেছে এফডিসিতে। নাকের ডগায় এমন সব অঘটন ঘটলেও প্রশাসন আর মন্ত্রণালয় সবাই নির্বিকার- এমন অভিযোগ চলচ্চিত্রকারদের। গত শনিবার এফডিসিতে ঘটে গেছে আরেকটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে এখানে। পরে ঘটনার সঙ্গে জড়িত মানিক মিয়া নামে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। এফডিসির নিরাপত্তা বিভাগের সহকারী পরিচালক এ কে এম আমিনুল করিমের কাছে এ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘এক যুবক শনিবার বিকালে চাপাতি নিয়ে এফডিসির গেট দিয়ে প্রবেশ করতে চাইলে নিরাপত্তারক্ষীরা তাকে বাধা দেন। তখন সেই যুবক নিরাপত্তারক্ষীদের ওপর আক্রমণ করতে উদ্যত হলে নিরস্ত্র রক্ষীরা ভয়ে সরে যান এবং যুবকটি এফডিসিতে প্রবেশ করে প্রশাসনিক ভবনে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। পরে পুলিশ এসে তাকে আটক করে নিয়ে যায়। কিন্তু কেন সে এখানে হামলা করল এখনো তা জানা যায়নি। এদিকে এই নিরাপত্তা কর্মকর্তা আক্ষেপ করে জানান, এফডিসির মতো একটি কেপিআইভুক্ত এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনী প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। যারা অবসরে যায় তাদের স্থলে নতুন কোনো নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না দীর্ঘদিন ধরে। এখন এখানে তিন শিফটে ১০ জন গার্ড পাহারা দেন। আগে এখানে একটি আনসার ও পুলিশচৌকি ছিল। কিন্তু গত প্রায় দেড় বছর ধরে আনসার নেই, চার শিফটে মাত্র দুজন পুলিশ ও একজন নায়েক আছে। তাও আবার নিরস্ত্র। তাই এফডিসির পক্ষ থেকে অনেক আগেই এখানে সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষী চেয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে লিখিত আবেদন করলেও এখন পর্যন্ত তা পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে কেপিআইভুক্ত সুরক্ষিত আঙিনাটির নিরাপত্তা অনেকটাই ভেঙে পড়েছে। নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এফডিসিতে অবাধে বহিরাগত প্রবেশে ঘটছে চুরির মতো ঘটনাও।